প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চাওয়া সেই ছাগল মালিক মাদক ব্যবসায়ী

কুষ্টিয়া, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, কুষ্টিয়া, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 11:58:15

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে চাওয়া ১০০ কেজি ওজনের সেই ছাগলের মালিক ইসমাইল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি মাদক ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাতে মহিষকুন্ডি বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম।

গ্রেফতার ইসমাইল হোসেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার গ্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুন্ডি গ্রামের মৃত সামছুদ্দিন মণ্ডলের ছেলে।

কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে আলোচনা শুরু হয়। আর তা হল ইসমাইল হোসেন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে ১০০ কেজি ওজনের একটি ছাগল প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চান।

পরে প্রধানমন্ত্রীর জন্য ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের উদাহরণ জানিয়ে খবর প্রকাশ হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমেও। বিষয়টি সর্বমহলে আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়। কৌতূহলও জাগে অনেকের মনে। ছাগলটি দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকার মানুষ তার বাড়িতে ভিড় করতে থাকে।

এলাকাবাসী জানায়, বাচ্চা থেকেই লালন পালন করা হলেও প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেয়ার কথাটি আগে কখনো শোনা যায়নি। হঠাৎ করে কথাটি শোনা যাচ্ছে। ইসমাইল ও তার মা কেন হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রীকে ছাগল উপহার দিতে চান তা নিয়েও তাদের মনে প্রশ্ন জাগে।

এদিকে পুলিশের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাগল উপহারের উদ্যোক্তা ইসমাইল একজন চা বিক্রেতা। স্থানীয় বাজারে তিনি চা বিক্রি করেন। মা লতিফুননেছা ও স্ত্রী সন্তান নিয়ে ইসমাইল একই বাড়িতে থাকেন। চা বিক্রি করে সে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু বাস্তবতা এর বিপরীত। ইসমাইল একজন মাদক ব্যবসায়ী। তিনি চায়ের ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে মাদকের ব্যবসা করে আসছেন। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মোটরসাইকেল যোগে মাদকসেবীরা তার দোকানে এসে মাদক ক্রয় ও সেবন করে। এর আগে ইসমাইল ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। তার নামে দৌলতপুর থানায় মাদকের মামলা আছে বলেও জানা যায়।

ইসমাইল বলেন, ‘আমার বাড়িতে ওই ছাগলটির জন্ম হয়েছে। আমার মা ছাগলটি লালন পালন করেন। আমি ও আমার মা ১০০ কেজি ওজনের এই ছাগলটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চাই।’

মাদক ব্যবসার অভিযোগ সম্পর্কে ইসমাইল বলেন, ‘আমি মাদক ব্যবসা করি না। আমার চা একটু ভালো হয়। তাই বিভিন্ন জেলা বা থানা থেকে লোক আসে।’

এদিকে ইসমাইলের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ উঠলে দৌলতপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম ও উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দলকে বিষয়টি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়।

প্রায় ১০ দিন তদন্তের পর বিষয়টির সত্যতা পাওয়ায় গত মঙ্গলবার রাতে উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের ওই দল মহিষকুন্ডি বাজারে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

দৌলতপুর থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানান, তার নামে মাদকের একটি মামলা রয়েছে। তিনি মামলায় পরোয়ানা ভুক্ত আসামি হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। তাই কোনো কৌশল করেও মাদক ব্যবসায়ীরা বাঁচতে পারবে না।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও তদন্ত চলছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর