কৃষক আবুল কাশেম (৫৬)। তিনি শুধু কৃষি কাজই করেন না, আছে মুদি দোকানও। তবে প্রায় ৪০ বছর ধরে কৃষিকাজ করে আসছেন তিনি। অন্যের জমিতে চাষাবাদ করে এক পর্যায়ে শুরু করেন মুদি ব্যবসা। কিন্তু ছেড়ে দেননি কৃষিকাজ। পুরনো কাজকে এখনো জীবিকার সর্বোচ্চ আসনে রেখেছেন। মাটি আর ফসলের গন্ধই আবুল কাশেমকে কাজের শক্তি যোগায়।
রোববার (১৭ মার্চ) বিকালে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার শাকচর গ্রামে সয়াবিন ক্ষেতে কীটনাশক ছিটাতে দেখা যায় আবুল কাশেমকে। এ সময় তিনি বার্তা২৪.কম-কে কৃষিকে আঁকড়ে থাকার কথাটি জানান।
জানা গেছে, আবুল কাশেম সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের কাদিরা গোজা এলাকার আবদুর রবের ছেলে। তার দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। কাদিরা গোজাতে বড় ছেলে রুবেলের নামে প্রায় ১৫ বছর আগে একটি মুদি দোকান দেন তিনি।
চাষাবাদের পাশাপাশি মুদি দোকানের আয় দিয়ে ভালোই চলছে তার সংসার। এখন আর তার কোনো পিছুটান নেই। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আবুল কাশেম দোকানে সময় দেন। দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত তার সময় কাটে ক্ষেতে।
আবুল কাশেম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স সাত কিংবা আট ছিল। বাবার সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকতো। তাই পড়ালেখা করতে পারিনি। যুদ্ধের ১০ বছর পর থেকে অন্যের জমিতে কৃষিকাজ শুরু করেছিলাম। এভাবে প্রায় ১৫ বছর চলে। পরে জমি ইজারা নিয়ে কৃষিকাজ শুরু করি। এক পর্যায়ে এলাকায় একটি মুদির দোকান দেয়।’
তিনি বলেন, ‘মুদি ব্যবসা ভালোই চলে। তবু কৃষিকাজ ছাড়তে পারি না। চাষাবাদে সময় দিতে পারলে নিজে আত্মতুষ্টি পাই। এই জন্য এখনো চাষাবাদ করে যাচ্ছি। মূলত মাটি আর ফসলের গন্ধ সব সময় আমাকে আকর্ষণ করে। এজন্য কৃষিকাজ ছাড়তে পারিনি।’
এ বছরের চাষাবাদ সম্পর্কে আবুল কাশেম বলেন, ‘ক্ষেত ইজারা নিয়ে এবার দেড় একর জমিতে সয়াবিন রোপণ করেছি। এতে ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। মাঘ মাসের শেষ সময় ক্ষেতে বীজ ফেলা হয়েছে। এখন গাছে ফুল আসছে। বৈশাখ মাসের দিকে সয়াবিন পাকবে।’