সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের পুরানটেপরী গ্রামের কবরস্থানের পাশে চরনরিনা-নওকৈর ডিগ্রিরচর সড়কের উপর ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি কংক্রিট সেতু গত ১৮ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০০০ সালের দিকে শাহজাদপুর উপজেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রায় ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করে। সেই থেকে গত ১৮ বছরেও পরিত্যক্ত এ সেতুটির দু’পাশে কোনো সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে সেতুটি এলাকাবাসীর কোনো উপকারে আসছে না। এটি এখন এলাকাবাসীর গলার কাঁটা ও মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যেই সেতুটির রেলিং ভেঙে পড়েছে। অনেক স্থানের খোয়া-বালি খসে খসে পড়ছে। শেওলা ও জঙ্গলে ছেয়ে গেছে সেতুর চারপাশ।
সেতুটির দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের অভাবে এ এলাকার ১৭ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
গ্রামগুলো হল- নরিনা, চর নরিনা, টেপরী, চরটেপরী, বারইটেপরী, পুনারটেপরী, নবীপুর, বওশাগাড়ি, সাতবাড়িয়া, আগনুকালি, জয়রামপুর, চিলাপাড়া, ডিগ্রিরচর, কালিপুর, চরনবীপুর, নওকৈর ও রাজপুর।
এ ব্যাপারে চর নরিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ, সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা, সাইদুল ইসলাম, কেয়া খাতুন ও এ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. আব্দুস সেলিম জানান, চর নরিনা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নরিনা হাইস্কুল, সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ, সাতবাড়িয়া কারিগরি কলেজ ও চর নরিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহায়। এছাড়া চর নরিনা বাজার, নরিনা বাজার, সাতবাড়িয়া বাজার ও তালগাছি বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রতিদিন ও সপ্তাহের দুইদিন যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে সেতুটির নিচে পানি শুকিয়ে গেলে সেখান দিয়ে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পাড় হতে হয়। এতে খরচ ও সময়ের অপচয় হয়। তাই তারা অবিলম্বে এ সেতুটির দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জোর দাবি জানান।
গাড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, আগামী সেশনে কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে সেতুটির সংযোগ সড়ক তৈরি করে দেয়া হবে। এতে যদি না হয়, তবে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন জানান, এলাকাবাসী এ বিষয়ে লিখিত ভাবে আবেদন করলে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।