স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরিফা বেগম (১৯)। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাতে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা মহীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) মুমূর্ষু অবস্থায় এই গৃহবধূকে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার বুক ও শরীরের নিচের অংশ পুড়ে গেছে।
এদিকে, ঘটনার পর আরিফার স্বামী জনি মিয়া (২৩) সহ পরিবারের লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, এক বছর আগে উপজেলার মহীপুর গ্রামে ফেরদৌসের ছেলে জনির সাথে পৌর এলাকার পোস্ট অফিস পাড়ার দরিদ্র ভ্যান চালক কামাল হোসেনের মেয়ে আরিফার বিয়ে হয়। যৌতুক হিসাবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বিয়ের পর থেকে আরো যৌতুকের দাবি করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো।
আরিফার বাবা কামাল হোসেন বলেন, মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিয়ের সময় জামাই জনি মিয়াকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেই। এরপরও যৌতুকের জন্য মেয়েকে চাপ দিত। এ নিয়ে পরিবারিক কলহের জের ধরে জনি মিয়া আরিফার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। মেয়ের অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ২ ঘণ্টা পরও শ্বশুরবাড়ির লোকজন চিকিৎসার উদ্যোগ না নিয়ে বাড়িতেই ফেলে রাখে। এ ব্যাপারে জনি মিয়ার চাচি মুঠোফোনে আমাকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে প্রথমে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিবের সহযোগিতায় বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তার দাবি, আরিফার শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তারা কখনো বলছে- রাত ১০টার দিকে ভাত রান্না করতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। আবার কখনও বলছে- আরিফা শুয়ে থেকে নিজেই শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
সরেজমিনে মহিপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে তালা ঝুলিয়ে জনি মিয়াসহ পরিবারের লোকজন গা-ঢাকা দিয়েছে। এলাকাবাসী জানান, কালার টিভি ও ফ্যানের দাবিতে জনি মিয়া তার স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর করতো। অগ্নিদগ্ধের ঘটনার পর আরিফার চিৎকারে এলাকার লোকজন বাড়িতে গেলে কাউকে ওই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বজলার রহমান জানান, বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।