গাইবান্ধায় সয়াবিন চাষে সাফল্য, বাড়ছে চাষাবাদ

গাইবান্ধা, দেশের খবর

তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 04:12:00

কৃষক রেজাউল করিম; কৃষক পরিবারেই তার জন্ম। বিভিন্ন ফসল চাষ করাই তার নেশা ও পেশা। এবারে দেড় একর জমিতে চাষ করেছেন সয়াবিন। এ ফসল ক্ষেতে রঙিন স্বপ্ন দেখছেন রেজাউল। সয়াবিনের গাছগুলো যেন স্বপ্ন পূরণে হাতছানি দিয়ে ডাক দিচ্ছে তাকে।

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার উত্তর কাজীবাড়ী সন্তোলা গ্রামের মৃত আবু হোসেনের ছেলে রেজাউল করিম। এ্যাফেক্স কোম্পানি লিমিডেটের পরামর্শে গত বছর ৪০ শতক জমিতে পরিক্ষামূলকভাবে সয়াবিন চাষাবাদ করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে এ ক্ষেত থেকে ১১ মণ সয়াবিন ফসল উৎপাদন হয়। প্রতি মণ সয়াবিন বিক্রি করেন ১২০০ টাকায়। ফসল উৎপাদনে খরচ হয়েছিল চার হাজার টাকা। ফলে সয়াবিন চাষাবাদ করে অনেকটাই লাভবান হন রেজাউল।

সেই লাভের আশা নিয়ে এবার রেজাউল করিম তার নিজস্ব দেড় একর জমিতে সয়াবিন চাষ করেছেন। ফসলের মাঝামঝি সময়ে এ ক্ষেতে এখন চারিদিকে সবুজের সমারোহ দেখা দিয়েছে। রয়েছে অধিক ফলনের সম্ভাবনা।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রবি ও খরিফ দুই মৌসুমেই সয়াবিন বপন করা যায়। রবি মৌসুমের পৌষ মাসে বীজ বপন করা ভালো। বর্ষা মৌসুমের শ্রাবণ থেকে মধ্য ভাদ্র পর্যন্ত বীজ বপনের উপযুক্ত। সয়াবিন সারিতে বা ছিটিয়ে বপন করা যায়। তবে সারিতে বপন করলে সারি থেকে সারির দূরত্ব রবি মৌসুমে ১২ ইঞ্চি এবং খরিফ মৌসুমে ১৬ ইঞ্চি রাখতে হয়। গাছ থেকে গাছের দূরত্ব দুই থেকে আড়াই ইঞ্চি রাখতে হয়।

সয়াবিন চাষি রেজাউল করিম জানান, এটির চাষ বেশ লাভজনক। অন্যান্য ফসলের চেয়ে খরচ কম ও উৎপাদন বেশি। বিঘা প্রতি (৩৩ শতক) খরচ পড়ে ৩-৪ হাজার টাকা। অথচ ফসলের মান ভালো হলে বিঘা প্রতি নয় মণ সয়াবিন উৎপাদন করা সম্ভব। যার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১২-১৪ হাজার টাকা। তবে এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের কোনো সহযোগিতা কিংবা পরামর্শ পাই না।

এ্যাফেক্স কোম্পানি লিমিডেটের সহযোগিতায় এবার গাইবান্ধায় ১৫০ একর জমিতে সয়াবিন চাষ করা হয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির প্রোডাকশন অফিসার আজিজুল ইসলাম।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের মিয়া জানান, খাদ্য হিসেবে সয়াবিনের ব্যাপক ব্যবহারের কারণ হচ্ছে এতে শতকরা ৪০ ভাগের অধিক আমিষ এবং ২০-২২ ভাগ তেল রয়েছে। মানুষের সুস্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধে সয়াবিনজাত প্রোটিনের কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। সয়াবিন তরকারী ছাড়াও দুধ ও বিস্কুট তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এবং পশু খাদ্য হিসেবে যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। ফলে অনেক চাষিই এখন সয়াবিন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর