ঢাকার বনানীতে এফআর টাওয়ারের আগুন কেড়ে নিল বগুড়ার সান্তাহারের মেয়ে তানজিলা মৌলি মিথির জীবন। মাত্র আট মাস আগে বিয়ে হয় মিথির। টাওয়ারে আগুন লাগার পর আটকে পড়া মিথি শেষ ফোনটি করেছিলেন তার বাবা আইনজীবী মাসুদুর রহমান মাসুদের কাছে। সংবাদ পেয়েই বাবা মাসুদ পাগলের মতো ছুটে যান সান্তাহার থেকে ঢাকায়। কিন্তু ততক্ষণে নিভে গেছে মিথির জীবন প্রদীপ। মিথি তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান।
ওই ফোন কলে মিথি তার বাবাকে বলেছিলেন, ‘বাবা আমার অফিসে আগুন লেগেছে। আমি কোনোভাবে বের হতে পারছি না। প্লিজ, আমাকে বাঁচাও।’
তবে পাগলের মতো ছুটে এসেও মেয়েকে বাঁচাতে পারেননি মাসুদ। পরে কুর্মিটোলা হাসপাতালে গিয়ে মেয়ে মিথির নিথর দেহ শনাক্ত করেন। আগুন লাগা ভবনের ১০ তলায় প্রচণ্ড কালো ধোঁয়া আর আগুনের তাপে নিঃশ্বাস নিতে না পেরে মারা যান মিথি। মিথির অকাল মৃত্যুর খবরে সান্তাহার পৌর শহর জুড়ে চলছে শোকের মাতম।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল থেকে বগুড়ার সান্তাহার পৌর শহরের বশিপুর সরদার পাড়ায় মিথিদের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছে শত-শত নারী-পুরুষ। সবাই পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছে।
জানা গেছে, গত বছরের ৪ আগস্ট বিয়ে হয় মিথির। স্বামী রায়হানুল ইসলাম রায়হান কাজ করেন ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সে। মিথি কিছুদিন আগে হেরিটেজ এয়ার এক্সপ্রেস নামের একটি ট্যুরিজম কোম্পানিতে যোগদান করেন। বনানীর এফআর টাওয়ারের ১০ম তলায় ছিল অফিস। মিথি এশিয়ান ইউনিভার্সিটির বিবিএ ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, মিথির লাশ ঢাকা থেকে বগুড়ার সান্তাহারে বাবার বাড়িতে আনা হয়। সেখানেই জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।