হত্যার বিচার চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন স্বামী

ঠাকুরগাঁও, দেশের খবর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,ঠাকুরগাঁও, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 04:18:27

মামলা করার পরেও কোনো আসামিও ধরা হচ্ছে না। আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলা হলো, বিচার কি পাবো না আমি? আমি কিভাবে চলব দুনিয়াতে তাকে (স্ত্রী) ছাড়া। গরীবেব জন্য কী দুনিয়াতে কোনো আইন নেই? আমি আমার স্ত্রী হত্যার বিচার চাই।

ঠিক এভাবেই রোববার (৩১মার্চ) বিকালে ঠাকুরগাঁও হরিপুর উপজেলার পূর্ব ঝাড়বাড়ী টেংরিয়া গ্রামে কান্নাজড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন ওই এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান (৬১)।

স্ত্রী জাহানার বেগমের (৪১) মারা যাওয়ার পরে প্রতিনিয়তই তার কবরের কাছে গিয়ে কাদঁছেন মজিবর। কোনোভাবেই ভুলতে পারছেন না স্ত্রী জাহানারাকে। স্ত্রী হত্যার বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে ওই এলাকার বাসিন্দা মজিবর ও শাহিনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। গত ২১ মার্চ সকালে মজিবর রহমানের ১১ শতক জমি জোরপূর্বক দখল করতে যায় শাহিন আলম ও আমিরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন।

এসময় মজিবরের স্ত্রী জাহানারা বেগম (৪১) তাদের বাধা দিতে গেলে শাহিন তার হাতে থাকা একটি বাঁশ দিয়ে জাহানারাকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় জাহানারা। পরে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এ

ঘটনার পর মজিবর রহমান শাহিন ও আমিরুলসহ আরো ১২জনকে আসামি করে হরিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মজিবরের অভিযোগ, মামলা করার এক সপ্তাহের বেশি হলেও ধরা হয়নি কোনো আসামিকে। ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছেন আসামিরা।

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শাহিন ও আমিরুল আমাদের জমিটি দখল করে নিতে চায়। এর আগেও একাধিকবার তারা চেষ্টা করেছে। লাঠি সোটা নিয়ে আসে আমাদের হুমকি দেয়। অনেক পায়তারা করে আমার জমিটি দখল করে নেওয়ার।’

এই ঘটনায় অভিযুক্ত শাহিন আলমকে একাধিকবার মোবাইলফোনে ফোন করা হলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে ভাতুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী অভিযোগের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘জমি নিয়ে দুই পক্ষের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে।’

নিজ ছেলে এই মামলায় জড়িত থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত ১৮ মার্চ আমি উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেছিলাম। কিন্তু আমার ছেলে ঘোড়া মার্কার জন্য প্রচারণা করেছিল। যার ফলে একটি পক্ষ তাকে এই মামলায় জড়িয়ে দিয়েছে। তাকে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জড়ানো হয়েছে। তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

এই বিষয়ে হরিপর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুজ্জামান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ময়নাতদন্তের কোনো রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। মজিবর ১৪ জনের নামে একটি মামলা করেছে।’

মামলার পর থেকে সকল আসামি পলাতক রয়েছেন। আমরা চেষ্টা করছি তাদের ধরে আইনের আওতায় আনার।

এ সম্পর্কিত আরও খবর