বয়সের বাধাকে উপেক্ষা করে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ছেলের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া আলোচিত সেই মা মলি রাণী এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তার বয়স ৩৭ বছর। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে চলতি এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তিনি ওই কলেজের উদ্যোক্তা উন্নয়ন ট্রেডের ছাত্রী।
এদিকে ছেলে মৃন্ময় কুমার কুণ্ডু মায়ের সঙ্গে এসএসসি পাশের পর নাটোর শহরে টিএমএসএস পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বর্তমানে চতুর্থ সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষার্থী।
জানা যায়, ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ছেলের চেয়ে ভালো ফলাফল করেন মা মলি রাণী। তিনি পেয়েছিলেন জিপিএ ৪ দশমিক ৫৩ এবং ছেলে মৃন্ময় কুমার কুণ্ডু পেয়েছিলেন জিপিএ ৪ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট।
কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মলি বাগাতিপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেড এবং ছেলে মৃন্ময় বাগাতিপাড়া মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বিল্ডিং মেইনটেনেন্স ট্রেডের শিক্ষার্থী ছিলেন। এসএসসি পাশের পর মলি রাণীর সাফল্যে তৎকালীন এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম ও সদ্য প্রয়াত বইপ্রেমী পলান সরকার তার বাড়িতে ছুটে আসেন। আর তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক মা ও ছেলেকে ডিসি অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে ল্যাপটপ উপহার দেন। উপজেলা প্রশাসন মা দিবসে সংবর্ধনা দেয় মলিকে। এরপর তিনি ভর্তি হন কলেজে। কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ উদ্দিন আহম্মেদ বিনা খরচে তার পড়ালেখার দায়িত্ব নেন।
মলি রাণী জানান, যখন তিনি নবম শ্রেণির ছাত্রী, তখন তার বাবা বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুরের মিষ্টি ব্যবসায়ী দেবব্রত কুমার মিন্টুর সঙ্গে বিয়ে দেন। তার বাবার বাড়ি নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার প্রসাদপুরে। বাবার নাম অসিত কুণ্ডু। এরপর আর পড়ালেখা করার সুযোগ হয়নি। এরই মধ্যে তার দুই সন্তানের জন্ম হয়। বড় ছেলে মৃন্ময় কুমার কুণ্ডু এবং ছোট ছেলে পাপন কুণ্ডু। ছেলেদের পড়ালেখা করাতে গিয়ে তিনি অনুভব করেন তারও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থাকা দরকার। সেই ভাবনা থেকেই স্কুলে ভর্তি হন।