ফলন ভালো হলেও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চুয়াডাঙ্গার ভুট্টা চাষিরা। অন্যান্যবার লাভের মুখ দেখলেও এবার উৎপাদন খরচই উঠছে না তাদের। এখানকার কৃষকেরা বলছেন লাভ তো দূরের কথা খরচই উঠছে না তাদের।
ভুট্টা আবাদে প্রতিবছরই বাংলাদেশের শীর্ষে থাকে চুয়াডাঙ্গা জেলা। এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া ভুট্টা চাষের অনুকূল হওয়ায় প্রতিবছরই বাড়ছে ভুট্টার আবাদ। বিগত বছর গুলোতে ভুট্টার দাম ভাল পাওয়ায় এবছরও জেলার অধিকাংশ কৃষক ভুট্টা আবাদ করেছেন। ফলনও হয়েছে গেলবারের চেয়ে ভাল।
তবে এবার ভুট্টা অন্যান্য বারের চেয়ে প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। এখানকার কৃষকরা বলছেন, গত বছর এই সময়ে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা মণ দরে ভুট্টা বিক্রি হলেও এবছর চলতি মৌসুমি শুরুতে চুয়াডাঙ্গা জেলায় কাঁচা ভুট্টার দাম কমেছে মণ প্রতি ৩০০ টাকা।
চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের ভূট্টাচাষী মজনু মিয়া জানান, কিছুদিন আগেও ভুট্টার দাম কিছুটা থাকলেও এখন তা আর নেই। বর্তমান বাজারে কাঁচা ভুট্টা ৪২০ টাকা করে বিক্রি করতে হচ্ছে।এতে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের।
একই কথা জানালেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তালতলা গ্রামের ভূট্টাচাষী খাইরুল ইসলাম। তিনি বলেন, লাভের আশায় দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। খরচ হয়েছে ১৭ হাজার টাকা। লাভ তো দূরের কথা ভুট্টা বিক্রি করে এখন আসলই উঠছে না।
একই গ্রামের ভুট্টাচাষী আলী হোসেন জানান, গতবছর ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা মণ দরে ভুট্টা বিক্রি করলেও এবছর মার্চ মাসের প্রথম দিকে ভুট্টা বিক্রি করতে হচ্ছে ৪২০ থেকে ৪৪০ টাকা মণে। যা মণপ্রতি প্রায় ২০০ টাকা কম।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফর বলছে, গত ১০ বছরে চুয়াডাঙ্গায় ভূট্টার আবাদ নিদিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করছে। এবছর চুয়াডাঙ্গা সদরে ১৩ হাজার ৯শ, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৯ হাজার ২৮৮, দামুড়হুদা উপজেলায় ১২ হাজার ৫শ ও জীবননগর উপজেলায় ৬ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে ।
চুয়াডাঙ্গার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নাইম আল সাকিব বার্তা২৪.কমকে জানান, এবছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট ৪১হাজার ৭৪১শ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। ভুট্টার দাম কমে যাওয়া বিষযে তিনি বলেন, কৃষকের হাতে বাজারের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। উৎপাদিত ফসল কৃষক ঘরে রাখতেও পারে না। অভাবের সংসারে টাকার প্রয়োজনে তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে দিতে হয়। এজন্যই ভুট্টার দাম কমে গেছে। ব্যবসায়ীরা ভুট্টা কিনে রাখছেন। তারা ঠিকই লাভবান হবেন।