সরকারি চাকরির নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দীর্ঘ সময় ধরে কর্মস্থলের বাইরে রয়েছেন পাবনার চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চার চিকিৎসক।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, চার চিকিৎসকের কেউ সাত বছর আবার কেউবা নয় বছর ধরে কর্মস্থলে অননুমোদিতভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন। তারা কোথায় আছেন বা কি করছেন এ ব্যাপারে কারো কাছে কোন তথ্য নেই।
তাদের অনুপস্থিতির ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এই চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলাকে অনেকেই দায় সারা বলে আখ্যায়িত করেছেন।
এই চার চিকিৎসক হলেন- সহকারী সার্জন (ইএমও) ডা. অরুন্ধতী কুণ্ডু, সহকারী সার্জন (প্যাথলজিষ্ট) ডা. গুলেতাজকীয়া, সহকারী সার্জন মোছা. আরিফা সুলতানা ও মেডিকেল অফিসার রাশেদুল হক খান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডা. অরুন্ধতী কুণ্ডু ২০১২ সালের ১৩ আগস্ট থেকে, ডা. গুলেতাজকীয়া ২০১১ সালের ১লা জুন থেকে, ডা. আরিফা সুলতানা ২০১০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে এবং ডা. রাশেদুল হক খান ২০১০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
সূত্র জানায়, কাগজে কলমে হাসপাতালে তাদের অবস্থান থাকলেও বাস্তবে তারা রয়েছেন অনুপস্থিত। সরকারি চাকরির বিধির কোন নিয়ম কানুন না মেনে ‘নিরুদ্দেশ’ রয়েছেন তারা। তারা অন্য কোন জায়গায় চাকরি নিয়েছেন না বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন এ ব্যাপারে কোন তথ্য নেই কর্তৃপক্ষের কাছে।
এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে শুধু চিঠি চালাচালি করেই দায় সেরেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নেয়া হয়নি তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা। এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার সাধারণ মানুষ।
জানা যায়, পাবনার চাটমোহর উপজেলায় প্রায় ৪ লাখ লোকের বাস। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পঞ্চাশ শয্যায় উন্নীত হওয়ার পর এই এলাকার সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিয়ে আশার আলো জাগে।
এলাকাবাসী জানায়, একসময় বেশকিছু চিকিৎসক এই হাসপাতালে যোগদানও করেছিলেন। হটাৎই ছন্দপতন ঘটে। একে একে চিকিৎসকরা ইচ্ছে মতো বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে যান। আর এই চারজন চিকিৎসকতো ‘নিরুদ্দেশ’।
এদিকে জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরে ওই চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির বিষয়ে চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া পাননি স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। বর্তমানে তিনজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে এই হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন উপজেলার সাধারণ মানুষ। স্বাস্থ্য সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সবিজুর রহমান জানান, চারজন চিকিৎসক দীর্ঘদিন যাবৎ বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত রয়েছেন। তাদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হয়েছে। অদ্যাবধি কোন সমাধান হয়নি। এর একটা সুরাহা হওয়া দরকার।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাবনার সিভিল সার্জন একেএম আবু জাফরের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি।