গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেকুজ্জামানের নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুলের একটি ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় পিঞ্জুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাইদ সিকদার ও তার লোকজন। এতে ওই অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ওই স্কুলের সাড়ে তিন’শ শিক্ষার্থী। বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে তাদের পড়াশোনা।
শনিবার (৬এপ্রিল) স্কুল চলাকালীন কোটালীপাড়া উপজেলার পিঞ্জুরী ইউনিয়নের কাকডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সাদেকুজ্জামানের ছেলে কামরুজ্জামান বলেন, ২০০৫ সালে আমি কাকডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে সরকারি জায়গায় আমার বাবার নামে একটি স্কুল স্থাপন করি। প্লে-গ্রুপ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলটিতে পাঠদান করানো হয়। বর্তমানে স্কুলটিতে সাড়ে তিন শত ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।
শনিবার হঠাৎ করে ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাইদ সিকদার তার লোকজন দিয়ে স্কুল থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বের করে দেন। পরে স্কুল ঘরটি ভেঙে ফেলেন।
স্কুলটির অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী হুমায়রা খানম, সোহাদা খানম, সোয়ামনি বলেন, বর্তমানে আমাদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা চলছে। এসময় হঠাৎ করে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন স্কুলে এসে আমাদের স্কুলটি ভেঙে দেয়। আমরা এখন কিভাবে লেখাপড়া করবো?
পিঞ্জুরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাইদ সিকদার স্কুল ঘরটি ভাঙার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, জায়গাটি পিঞ্জুরী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের। যে জায়গাটির ওপর স্কুলটি রয়েছে সেখানে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উন্নয়নমূলক কাজ হবে। বছরের শুরু থেকে কামরুজ্জামানকে ঘরটি সরিয়ে নিতে বলা হচ্ছিল। কিন্তু, তিনি তা সরিয়ে নেয়নি। আগামী জুনের মধ্যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উন্নয়নমূলক কাজ না করলে বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত চলে যাবে। উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভা থেকে স্কুলটি সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে, তাই আমি সরিয়ে ফেলেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, শিক্ষা গ্রহণ করাটা ছাত্র-ছাত্রীদের মৌলিক অধিকার। স্কুল ভাঙার বিষয়টি আমি জেনেছি। চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে এ বিষয়ে আমার কথা হয়েছে। সেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে ঘর তুলেছিলেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে স্কুলঘর ভাঙার বিষয়টি আইন সম্মত নয়। এ বিষয়ে অভিযোগ এলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।