৩ ঘণ্টা অপেক্ষার পর চিকিৎসা পেল দগ্ধ শিশু

কক্সবাজার, দেশের খবর

মুহিববুল্লাহ মুহিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কক্সবাজার, বার্তা ২৪.কম | 2023-08-26 00:05:49

হাসপাতালে জরুরি বিভাগে এসে বসে ছিলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিন্তু কোনো ডাক্তারের সময় হচ্ছে না আগুনে পুড়ে যাওয়া মেয়েটিকে দেখার। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অনেক ডাক্তারের চোখে পড়লেও দেখেও যেন না দেখার ভান ধরে চলে যাচ্ছেন তারা। এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সুমাইয়ার মা-বাবা।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দুপুর পৌনে দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে। এর আগে অভিযোগ পাওয়া যায়, বেলা ১১ টার দিকে অন্য একটি ঘটনায় চিকিৎসকদের উপর হামলা করেছেন চিকিৎসা নিতে আসা অন্য রোগীর স্বজনরা। সেটারই প্রতিবাদ স্বরূপ চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখেন চিকিৎসকরা। শুধুমাত্র কর্মবিরতির কারণ দেখিয়েই সুমাইয়াকে চিকিৎসা না দিয়ে বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখেন।

আগুনে পুড়ে যাওয়া সুমাইয়া আক্তার (৪) কক্সবাজার সদর উপজেলার লারপাড়া এলাকার মো. সেলিম উদ্দিনের মেয়ে।

সুমাইয়ার পরিবারের দাবি, সকালে রান্না বসিয়ে সুমাইয়ার মা বাইরে গেলে ভুলবশত সুমাইয়া চুলার আগুনে পড়ে যায়। এরপর সে দগ্ধ হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু বেলা ১১ টায় হাসপাতালে আনা হলেও কোনো চিকিৎসকই সুমাইয়াকে চিকিৎসা দিচ্ছেন না। উল্টো হাসপাতাল বন্ধ বলে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। টাকার অভাবে বাইরের হাসপাতালে নিতে না পারায় জরুরি বিভাগের সামনেই বসে থাকেন তারা।

প্রত্যক্ষদর্শী রুহুল আফজা বেগম বলেন, ‘আমার ভাইকে নিয়ে এসেছি। বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। বলছে চিকিৎসা চলছে না। আগুনে পুড়ে যাওয়া মেয়েটিকেও বাইরে রেখেছেন তারা। অনেকে বলার পরও তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়নি।’

হাসপাতালে আসা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ডাক্তাররা কথায় কথায় চিকিৎসা বন্ধ করছেন। এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। যদি কেউ অপরাধ করে তাহলে তার জন্য দেশের আইন রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসা বন্ধ রেখে তারাই আইন হাতে তুলে নিচ্ছেন। অসহায় মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছেন। এ বিষয়ে সরকারের নজর দেয়া উচিত।’

এদিকে, চিকিৎসকদের উপর হামলার অভিযোগে মো. বিন আব্দুল্লাহ ওরফে ম্যাক্স নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক ডা. বিধান পাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় বিঘ্ন ঘটেছে। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে শুনার পর আগুনে পুড়ে যাওয়া সুমাইয়াকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এখন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা আবারও স্বাভাবিক হয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর