মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও চা বাগান এলাকায় অবস্থিত ছনখলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বাঁশ আর ছন দিয়ে তৈরি এই বিদ্যালয়ের অবকাঠামো। স্থানীয় চা শ্রমিক আর ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সন্তানেরা এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে।
আধুনিকতার ছোঁয়া তো দূরের কথা, ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাও নেই এই বিদ্যালয়ে। নড়বড়ে ঘর, বাতাসের গতি সামান্য বাড়লেই নড়তে থাকে।
চৈত্রের ঝড়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ছন-বাঁশের জরাজীর্ণ ঘরে প্রতিদিন ক্লাস করে সাতগাঁও চা বাগান ছনখলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। বৈশাখ শুরুর আগেই ঝড় তুফান ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তাই আকাশে কালো মেঘ আর দমকা হাওয়া দেখলেই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। অনেকে ভয়ে কান্নাও জুড়ে দেয়।
২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী এই বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ করা হয়, যদিও শিক্ষক গেজেট এখনও হয়নি। যার ফলে ওই স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ এখনও সরকারি বেতনের আওতাভুক্ত হননি। চা বাগান অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় বাগান কর্তৃপক্ষ তাদের সামান্য সম্মানি প্রদান করেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অমিতা দেব বার্তা২৪.কমকে জানান, স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১২৩ জন ছাত্রছাত্রী আছে। দুই শিফটে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। আছেন চারজন শিক্ষিকা।
অমিতা দেব বলেন, আমাদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা অনেক মেধাবী। গত দুই বছর যাবৎ সমাপনী পরীক্ষায় আমাদের স্কুলের পাসের হার ১০০%। শুধু অবকাঠামোগত সমস্যাটাই আমাদের প্রধান সমস্যা। বিশেষ করে ঝড়-বৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে খুব সমস্যায় পড়তে হয়। ঝড় আসলে স্কুলঘরে থাকার পরিবেশ থাকে না। বাচ্চারা ভয়ে কান্না করে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তারা স্কুলটি পরিদর্শন করলেও স্কুলঘর সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানান প্রধান শিক্ষিকা।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, এ স্কুলটি দ্বিতীয় পর্যায়ে জাতীয়করণ করা হয়েছে। এ ধরনের বিভিন্ন বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়নকাজের জন্য সরকারের প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে, প্রকল্প পরিচালক ও নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।