ঘড়ির কাঁটায় তখন ৯ টা ৪৫ মিনিট! আলীম পরীক্ষার্থীরা সোনাগাজী ইসলামীয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় প্রবেশ করছেন। মাদরাসা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেই বাম পাশের টিনের দোচালা লম্বা ঘরের শেষটি ৮ নাম্বার কক্ষ। ২৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে একজন অনুপস্থিত। রোল নাম্বার ১৪৯৬১৪। নাম নুসরাত জাহান রাফি।
ঠিক ১০ টায় যখন ঘণ্টায় শব্দ হলো। তখন নুসরাতের সহপাঠীরা প্রশ্ন হাতে লেখায় ব্যস্ত। আর অনুপস্থিত নুসরাত ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নিথর দেহ নিয়ে ঢামেকের মর্গে ময়নাতদন্তের অপেক্ষায়।
কোনভাবেই যেন বাঁচানো গেল না নুসরাতকে। বড় অভিমান নিয়ে শেষ পর্যন্ত চলে গেলেন নুসরাত। চিকিৎসকদের প্রাণান্ত প্রচেষ্টা, আত্মীয়-স্বজনদের প্রার্থনা সব কিছু উপেক্ষা করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। পরীক্ষা কেন্দের তার এ আসনে আর কেউ বসবে না, আসবে না আলীম পরীক্ষার ফলাফলও। সেখানে ফেল দেখানো হবে নুসরাতকে।
নুসরাতের ৮ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছেন তার সহপাঠী রিতা (ছদ্মনাম), বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'আমার সামনের আসনটিই নুসরাতের। গত দুই পরীক্ষায় যখন সামনের দিকে চোখ গেছে বুকের ভেতর হু হু করে উঠেছে। গতকাল যখন শুনলাম ও আর নেই। তখন সামনের ফাঁকা সিট রেখে, কিভাবে পরীক্ষা দিব। তা ভাবতে পারছিলাম না। আমি বা আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। ও আর আমাদের মাঝে আসবে না।'