রাতে ছাত্রীদের ফোন করে কুপ্রস্তাব দেন শিক্ষক

নাটোর, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট, নাটোর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-18 00:43:48

নাটোরের সিংড়া উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের গণিত শিক্ষক ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি, ভোগান্তি, হুমকি প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনেছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। 

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে ঐ স্কুলের ১৩ জন শিক্ষার্থী ও ১১ জন অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক ফজলুর রহমানকে অপসারণের পাশাপাশি কঠোর শাস্তির দাবিও করেছেন তারা। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক ফজলুর রহমান তার বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদেরকে তার কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন। তার কাছে প্রাইভেট না পড়লে ব্যবহারিক খাতায় নম্বর না দেওয়ার হুমকি দেন। প্রাইভেট পড়ানো অবস্থায় একাধিক শিক্ষার্থীর স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেওয়াসহ যৌন হয়রানি করেন এই শিক্ষক। 

অভিযোগে বলা হয়, রাতে ছাত্রীদের ফোন করে কুপ্রস্তাব দেন গণিত শিক্ষক ফজলুর রহমান। তার কুপ্রস্তাবে রাজি হলে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও বেশি নম্বর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

তিন পৃষ্ঠার এই অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত শিক্ষকের নামে মোট ১২টি অভিযোগ উল্লেখ করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া অভিযোগে বলা হয়, গত ৬ এপ্রিল গণিত পরীক্ষার প্রশ্ন তিনি তার কাছে প্রাইভেট পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে ফাঁস করে দেন।

এই ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা গত ৮ এপ্রিল প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ দিতে চায়। পরে অভিযুক্ত শিক্ষক বিষয়টি টের পেয়ে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার দিন তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন দিয়ে ছাত্রীদের ভিডিও করেন এবং বোরকার মুখ খুলতে বাধ্য করেন। 

জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষকের হুমকির কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এছাড়া এই শিক্ষকের ধারন করা ভিডিও বখাটেদের দিয়ে ছাত্রীদের সম্মানহানী করারও আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা। 

শিক্ষক ফজলুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। শিক্ষার্থীরা তার মেয়ের মতো, যৌন হয়রানির কোনো প্রশ্নই আসে না। স্কুলের একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানির চেষ্টা করছে।’

এ বিষয়ে স্কুলের অধ্যক্ষ আজিজুর রহমান মুঠোফোনে জানান, তিনি অফিসিয়াল কাজে দুই দিন যাবৎ ঢাকায় রয়েছেন। ঢাকা থেকে ফিরে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।

প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, ‘আমার দফতরে এই শিক্ষককের বিরুদ্ধে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর