কথিত ‘আধ্যাত্মিক’ ফকিরের দাফন নিয়ে বিরোধ, লাশ থানায়

নেত্রকোনা, দেশের খবর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, নেত্রকোনা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 18:14:13

লাল মিয়া ফকির (৮০)। এলাকায় তিনি ‘মোটা মামা’ হিসেবে পরিচিত এক ‘আধ্যাত্মিক’ ফকির। মৃত্যুর পর তার দাফন নিয়ে ভক্ত ও পরিবারের লোকজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এ অবস্থায় শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত থানা পুলিশের উপস্থিতিতে প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী দু’পক্ষের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকেও বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি। ফলে যে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে লাশটি কেন্দুয়া থানা হেফাজতে নিয়ে রাখা হয়েছে।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১০টার দিকে কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা গ্রামের ভক্ত ইনছান মিয়ার বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান লাল মিয়া ফকির।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লাল মিয়া ফকির ওরফে মোটা মামা বলে পরিচিত ওই ব্যক্তির গ্রামেরবাড়ি কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের চিটুয়া-নওপাড়া গ্রামে। তিনি অনেকদিন ধরেই বাড়িছাড়া। এ অবস্থায় গত চার মাস ধরে তিনি সান্দিকোনা ইউনিয়নের সান্দিকোনা গ্রামের ইনছান মিয়ার বাড়িতে বসবাস করছিলেন। একপর্যায়ে ওই ফকিরের নামে দশ শতাংশ জমিও দলিল করে দেন ইনছান মিয়া।

এ অবস্থায় বার্ধক্যজনিত কারণে লাল মিয়া ফকির শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১০টার দিকে ওই ভক্তের বাড়িতে মারা যান। পরে সেখানে তার কবর খোড়া হয়। একপর্যায়ে খবর পেয়ে লাল মিয়া ফকিরের স্বজনেরা সান্দিকোনায় ছুটে গিয়ে লাশ তাদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার দাবি করতে থাকেন। কিন্তু ভক্তরা তা কোনোভাবেই মানতে রাজি হননি। পরে বিষয়টি থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ালে কেন্দুয়া থানার ওসি ইমরাত হোসেন গাজীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ জানাজাস্থলে আসেন। পুলিশের উপস্থিতিতে বিকেল ৪টার দিকে জানাজা অনুষ্ঠিত হলেও দুইপক্ষের বিরোধের কারণে লাশ দাফন করা হয়নি।

এ অবস্থায় কেন্দুয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মাহমুদুল হাসান, ওসি ইমরাত হোসেন গাজী এবং সান্দিকোনা ও পাইকুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান যথাক্রমে আজিজুল ইসলাম ও হুমায়ূন কবির চৌধুরী উভয়পক্ষকে নিয়ে সান্দিকোনা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনে বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত চললেও লাশ দাফনের বিষয়ে কোনো সমঝোতা হয়নি। এ কারণে বিরোধ এড়াতে শেষ পর্যন্ত লাশটি থানা হেফাজতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠক শেষে কেন্দুয়া থানার ওসি ইমরাত হোসেন গাজী জানান, লাশের দাফন নিয়ে কোনো পক্ষই ছাড় দিতে নারাজ। তাই বিষয়টির কোনো সুরাহা না হওয়ায় লাশটি থানা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর