বগুড়ার হাট বাজারে পাওয়া যাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন শিম। কয়েক বছর আগেও চৈত্র-বৈশাখ মাসে শিম বাজারে পাওয়া যেত না। কিন্তু এখন চৈত্র মাসের শেষে শিমের গাছে নতুন ফুল এসেছে। আবার কোথাও থোকায় থোকায় শিম ধরেছে। নতুন করে শিম চাষ না করেও শীত মৌসুমে লাগানো গাছ থেকে কৃষক বিনা খরচে শিম উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সারটিয়া গ্রামের কৃষক আবদুর রাজ্জাক বার্তা২৪.কমকে জানান, তিনি ১৫ শতাংশ জমিতে ভাদ্র মাসে শিম চাষ করেন। মৌসুমের শেষ পর্যন্ত তিনি ৩০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছেন। চৈত্র মাসে শিম গাছ সাধারণতঃ মারা যায়। কিন্তু এবার কয়েক দফা বৃষ্টি হওয়ায় শিম গাছ মরেনি বরং নতুন করে গাছে ফুল এসেছে। তাই নিজেই গাছের পরিচর্যা করছেন। তিনি আরও বলেন, শিম চাষে তার খরচ হয়েছে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। ওই জমিতেই শিম গাছ থাকার পাশাপাশি কাঁকরোল চাষ করছেন। অসময়ে এই শিম আরও পাঁচ হাজার টাকা বিক্রি করবেন বলে আবদুর রাজ্জাক আশা করছেন।
বগুড়ার গাবতলী, সদর ও শাজাহানপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষের চিত্র। শাজাহানপুর উপজেলার নয় মাইল হাটে দেখা যায় বিভিন্ন এলাকার চাষীরা বাজারে শিম বিক্রি করছেন। কাঁচামাল ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রতিদিন নয় মাইল হাটে ১০০ থেকে ১২০ কেজি শিমের আমদানি হয়। এসব শিম ঢাকা ছাড়াও সিলেট ও চট্টগ্রামে পাঠানো হয়।
বগুড়ার মহাস্থান সবজি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানেও প্রতিদিন গ্রীষ্মকালীন শিমের প্রচুর আমদানি রয়েছে। মহাস্থান হাটে শিম বিক্রি করতে আসা বগুড়া সদরের সাত শিমুলিয়া গ্রামের কৃষক আক্কাস আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন তার জমিতে শিম গাছে যে পরিমাণ শিমের ফুল ধরেছে তাতে পুরো বৈশাখ মাসজুড়ে শিম ধরবে। এই শিম বিক্রি করে তিনি বাড়তি আয় করবেন।
বগুড়ার বিভিন্ন হাটবাজারে গ্রীষ্মকালীন শিম খুচরা ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০-২২ টাকা কেজি দরে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা আবদুর রহিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, শিম গাছ যত্ন করলে সাধারণত ১০ মাস বেঁচে থাকে। চৈত্র মাসে ফল না ধরায় কৃষক শিম গাছ কেটে জমিতে অন্য ফসল চাষ করে। সম্প্রতি চায়না জাতের ইফতা-১ও ২ জাতের শিম বগুড়ায় চাষ হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। এবার চৈত্র মাসে ব্যাপক বৃ্ষ্টি হওয়ায় এবং কৃষক শিম গাছের যত্ন করায় শিম গাছে ফুল আসে এবং ফলনও ভালো হচ্ছে। এতে কৃষকের বাড়তি কোনো খরচ হচ্ছে না।