বানেশ্বরী বেওয়ার ভরসা ‘পান বাক্স’

গাইবান্ধা, দেশের খবর

তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা , বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 13:25:35

গাইবান্ধা শহরের ব্রিজ রোড কালীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা বানেশ্বরী দাস বেওয়া। পরিবারের নয় সদস্যের অন্ন জোগাতে ৮০ বছর বয়সেও ফুটপাতে বসে পান বিক্রি করতে হয় তাকে।

সম্প্রতি আলাপকালে তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘মানুষের কাছে হাত পাতি না। ভিক্ষাবৃত্তিও করি না। বাক্সে পান বিক্রি করেই সংসার চালাই। এই পান বাক্সই আমার একমাত্র ভরসা।’

প্রায় ২০ বছর আগে বানেশ্বরী দাসের স্বামী কান্তীয়া দাস মারা যান। তাদের সংসারে আছে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। অনেক কষ্টে চার সন্তানের বিয়েও দিয়েছেন বানেশ্বরী বেওয়া। কিন্তু মেয়ে জামাইদের অশোভনীয় আচরণে দুই মেয়ে আর শ্বশুড় বাড়ি যায় না। তারা বর্তমানে বানেশ্বরী বেওয়ার বাড়িতেই অবস্থান করছেন। আর বড় ছেলে হরিপদ দাস ভবঘুরে ও ছোট ছেলে সঞ্জয় দাস শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদেরও বউ-বাচ্ছা আছে। সবমিলে পরিবারের নয় সদস্যের অন্ন যোগানদাতা একমাত্র বানেশ্বরী দাস বেওয়া।

উত্তরাধীকার সূত্রে কোনো সহায় সম্বল পাননি বানেশ্বরী বেওয়া। এক সময়ে জীবিকার তাগিদে বাসা-বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করলেও এখন আর কেউ ডাকেন না। ফলে নিরুপায় হয়ে পড়েন তিনি। এক পর্যায়ে ভিক্ষা করার চিন্তাও করেন। কিন্তু ভাবনাটা পরিবর্তন করে রাস্তার ধারে পান বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। পরে গাইবান্ধার পি.কে বিশ্বাস রোড়ের তৃপ্তি হোটেলের সামনে একটি অস্থায়ী দোকান দেন। সেখানেই দিন-রাত পান বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। তবে রোদ-বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাকে।

নিজের ব্যবসার বিষয়ে বানেশ্বরী বেওয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘পুঁজির অভাবে অস্থায়ী দোকান দিয়ে কোনোমতে দিনাতিপাত করছি। হাতে টাকা থাকলে স্থায়ী ভিত্তিতে দোকান দিতে পারতাম। এ বিষয়ে আমি বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করছি।’

এ বিষয়ে গাইবান্ধা পৌর কাউন্সিলর আবুল কালাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বানেশ্বরী বেওয়ার জীবন সংগ্রামের কথা লোকমুখে শুনেছি। সুযোগ হলে তার জন্য কিছু করার চেষ্টা করব।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর