বগুড়ায় বিএনপি নেতা অ্যাড. মাহবুব আলম শাহীন খুনের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে মাঠে নেমেছে পুলিশের একাধিক টিম।
এদিকে পরিবহন মালিকদের সংগঠন মোটর মালিক গ্রুপ নিয়ে চলমান বিরোধ নিয়ে শাহীনকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে নিহতের স্বজনরা। এছাড়াও উপশহর স্নিগ্ধা আবাসিক এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের বিষয়টি উঠে এসেছে।
পুলিশের কয়েকটি টিম ছাড়াও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সদস্যরা মাঠে নেমেছেন খুনের প্রকৃত কারণ এবং জড়িতদের গ্রেফতার করতে। তারা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছেন। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি টিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ জড়িতদের শনাক্ত করতে কাজ করছে। খুনের ঘটনার সঙ্গে ৭-৮ জন জড়িত ছিল বলে পুলিশ প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে।
নিহতের স্ত্রী আকতার জাহান শিল্পী বার্তা২৪.কমকে জানান, মোটর মালিক গ্রুপের চলমান বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তার স্বামীকে কয়েকদিন ধরে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল।
নিহতের ভাতিজা শাহরিয়ার বার্তা২৪.কমকে জানান, তার চাচার একটি বাস (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-১২৭০) রোববার সন্ধ্যার পরে বগুড়া থেকে ঢাকা যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বগুড়ার শেরপুরে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বাসটি আটক করা হয়। এ সময় বাসটির ডান পাশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তিনি আরও জানান, বাস আটকের খবর পেয়েই তার চাচা রোববার (১৫ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হন। এরপর উপশহর বাজার এলাকায় জিম শেষে চাল কিনেন। এর কিছুক্ষণ পর সদরের নুনগোলা ইউপি চেয়ারম্যান আলিমুদ্দিনের সঙ্গে গল্প করার সময় দুর্বৃত্তরা হামলা করেন। পরে দুজন পথচারী রক্তাক্ত অবস্থায় শাহীনকে উদ্ধার করে প্রথমে নামাজগড় এলাকায় স্বদেশ ক্লিনিকে নেন। সেখান থেকে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শাহীনের আরেক ভাতিজা মেজবাহ জানান, মোটর মালিক গ্রুপ নিয়ে দ্বন্দ্ব ছাড়াও উপশহর স্নিগ্ধা আবাসিক এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল শাহীনের। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে তার কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করা হচ্ছিল।
পুলিশের পক্ষ থেকে সব বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে অনুসন্ধান করে জড়িতদের শনাক্ত করার কাজ করে যাচ্ছে একাধিক টিম।
এদিকে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে বিকেল ৪টায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে মরহুমের নামাজে জানাজা করা হবে। এছাড়াও সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় বগুড়া আইনজীবী বার সমিতির পক্ষ থেকে ফুল কোর্ট রেফারেন্স এবং শোক সভার আয়োজন করা হয়। দুপুর আড়াইটায় আদালত চত্বরে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী বার্তা২৪.কমকে জানান, একাধিক বিষয় সামনে রেখে পুলিশ অনুসন্ধান করছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।