গোপালগঞ্জের ভোক্তারা প্রতিনিয়তই বিক্রেতাদের কাছে প্রতারিত হচ্ছে। বিক্রেতারা বিভিন্ন কৌশলে ভোক্তাদের ঠকিয়ে অতিরিক্ত লাভ করে যাচ্ছে। ওজনে কম দিয়ে, পচা-বাসি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মালামাল বিক্রিসহ নানা ভাবে ভোক্তাদেরকে প্রতারিত করা হচ্ছে।
আসছে রমজানকে সামনে রেখে অবশ্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (গোপালগঞ্জ) প্রায় নিয়মিত তাদের অভিযান পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু তাতে এই বিশাল এলাকায় এর সুফল তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। কেননা প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনায় বেরিয়ে আসছে ভোক্তা ঠকানোর নানা কলাকৌশল।
জরিমানা দিয়ে খালাস পেলেও আবারো সেই একই ব্যবসা চালিয়ে যায় বিক্রেতারা। সারা বছর ধরে ভোক্তাদের ঠকিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিলে বিক্রেতাদের উপর তেমন একটা চাপও পড়ে না। এ জন্য জরিমানার পাশাপাশি কারাদণ্ডের ব্যবস্থা থাকার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন অনেক ভোক্তা।
অতিসম্প্রতি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, গোপালগঞ্জের সহকারী পরিচালক শামীম হাসানের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে দেখা গেছে, এক কেজি মিষ্টির প্যাকেটে আড়াইশ গ্রামই নাই, এক কেজির দইয়ে থাকে না প্রায় ৪৩০ গ্রাম। তাছাড়া পচা দই, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এসব খাবার প্রস্তুত করাসহ হোটেলগুলোতে রয়েছে নানা অনিয়ম।
এছাড়া ফার্মেসিগুলোতে মেয়াদোত্তীর্ণ-নিম্নমানের ওষুধ রয়েছে। এসব ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করে প্রতিনিয়তই তাদের ঠকিয়ে আসছিলেন বিক্রেতারা। শুধু এটুকুতেই সীমাবদ্ধ নাই বিক্রেতারা। তারা যে যেভাবে পারছে তাদের পণ্যের মধ্যে ভেজাল দিয়ে ভোক্তাদেরকে ঠকিয়ে যাচ্ছেন। আর প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা।
একদিকে দামে ঠকছেন, ওজনে ঠকছেন এবং সঠিক পণ্যটিও তারা পাচ্ছেন না। এজন্য যদিও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (গোপালগঞ্জ) পক্ষ থেকে ভোক্তাদেরকে নিয়মিত লিফলেট ও অন্যান্যভাবে প্রচারণার মাধ্যমে সচেতন করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে তাতে খুব একটা কাজ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। কেননা যতদিন না বিক্রেতারা সৎ হবেন এবং অধিক লাভের আশায় ভোক্তাদেরকে না ঠকাবেন ততদিন এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন।
জেলা উদীচীর সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে ব্যাপক জনসচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে। যেসব বিক্রেতারা ভেজাল পণ্য বিক্রি করে থাকেন তাদেরকে প্রত্যাখান করাসহ আইনের সঠিক প্রয়োগেরও দরকার।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (গোপালগঞ্জ) সহকারী পরিচালক শামীম হাসান জানান, এ ব্যাপারে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। প্রচুর প্রচারণা, সভা, সমাবেশ, সেমিনার, গণশুনানি ও মত বিনিময় সভার আয়োজন করা দরকার বলে মনে করেন তিনি। তারা যখন বাজার তদারকি করেন তখন উপস্থিত জনগণকে আইন সম্পর্কে সচেতন করেন।