অরকা হোমে যেমন আছেন হতাহতের সন্তানরা

গাইবান্ধা, দেশের খবর

তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-21 14:23:02

২৪ এপ্রিল, ২০১৩ সালের এই দিনে ধসে পড়েছিল ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা। ভয়াবহ এ ট্র্যাজেডির ৬ বছর পূর্ণ হলো আজ। ওই দুর্ঘটনায় হতাহত পোশাক শ্রমিকদের পরিবারের মোট ৪৯ সন্তান ঠাঁই পেয়েছিল গাইবান্ধার ফুলছড়ির উপজেলার হোসেনপুরস্থ ‘অরকা হোম’-এ। যাদের মধ্যে গাইবান্ধার ১০, পাবনার ৭, জামালপুরের ১, রংপুরের ৮, সিরাজগঞ্জের ২, দিনাজপুরের ২ ও সাভারের ১৯ জন। এর মধ্যে ২৯ জন ছেলে এবং ২০ জন মেয়ে। এখানে লেখাপড়া, খেলাধুলা, বিনোদন ও মাতৃস্নেহে বেড়ে উঠছে তারা।

জানা গেছে, ওল্ড রাজশাহী ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা ২০১৪ সালে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে ‘অরকা হোম’ নামের এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলে। অরকা হোমের মাঠেই রয়েছে হোসেনপুর মুসলিম একাডেমি। সেখানেই তারা লেখাপড়া করে। তাদের জন্য মানসম্মত আবাসিক ব্যবস্থাসহ ক্যাডেট কোচিং, প্রজেক্টরের মাধ্যমে পাঠদান, বিনোদন, ক্রীড়া, পাঠাগার, সূর্য্যমূখী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে।

রানা প্লাজায় আহত শ্রীমতি গীতারাণীর ছেলে শংকর কুমার রায় অরকা হোমে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সে বার্তা২৪.কমকে বলে, ‘আমার মা রানা প্লাজার ৪র্থ তলার পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বাড়িতে ফেরে। কিন্তু মায়ের পক্ষে আমার পড়ালেখার খরচ বহন করা সম্ভব না। তাই বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহযোগিতায় অরকা হোমে থেকে লেখাপড়া করছি। উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে আমি প্রকৌশলী হতে চাই।’

নিহত নার্গিস বেগমের ছেলে আল-আমিন মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলে, ‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় মা মারা যাবার পর এখানেই আমার ঠাঁই হয়েছে। সরকারিভাবে ৯ লাখ টাকা পেয়েছি। বাবা তুহিন মিয়া পেয়েছেন ৭ লাখ। বাবার টাকা বিভিন্ন কাজে বিনিয়োগ করা। আমার টাকা এখনো ব্যাংক থেকে উঠানো হয়নি। অরকা হোমের সহায়তায় লেখাপড়া করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই।’

হোসনেপুর মুসলিম একাডেমি ও অরকা হোমের সভাপতি মো. জাহিদুল হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসে আহত বা নিহতদের সন্তানদের এখোনে লেখাপড়া, থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় খরচ বহন করা হয়। ভবিষ্যতে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর