‘টাকা নয়, রোগীর সেবা দেওয়াই আমার নেশা’

গাইবান্ধা, দেশের খবর

তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট গাইবান্ধা বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 19:23:18

‘টাকা নয়, রোগীর সেবা দেওয়াই আমার নেশা। আমি যতদিন বেঁচে থাকব, মানুষের সেবা দিয়ে যাব।’

এক রোগীর চিকিৎসা করতে করতে এ কথাগুলো বলছিলেন গাইবান্ধার হোমিও চিকিৎসক নুরুল ইসলাম সরকার। তিনি এলাকাবাসীর কাছে ‘পাঁচ পাইয়ের ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত। ১৯৬৮ সালে পাঁচ পয়সা দামে ওষুধ বিক্রি করেই প্রথম ব্যবসা শুরু করেন। এ জন্য সবাই তাকে পাঁচ পাইয়ের ডাক্তার হিসেবে চেনেন এবং জানেন। এছাড়া তিনি রোগী দেখতে কোনো ফি নেন না।

নুরুল ইসলাম সকারের বয়স প্রায় ৯৩ বছর। গাইবান্ধা সদর উপজেলার পশ্চিম কোমরনই গ্রামে তার বাড়ি। গাইবান্ধা শহরের পুরাতন বাজারস্থ তার হোমিও চিকিৎসালয়।

সরেজমিনে তার চিকিৎসালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নারী পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। চিকিৎসক নুরুল ইসলাম চেয়ারে বসে রোগের বর্ণনা শুনছেন। বিস্তারিত শোনার পর রোগ নির্ণয় করে ওষুধের নাম লিখছেন। আর তার তিনজন সহকারীরা পাউডার জাতীয় হোমিও ওষুধ রোগীর হাতে তুলে দিচ্ছেন। প্রতিদিন প্রায় ২ থেকে ৩০০ রোগীর চিকিৎসা দিয়ে চলেছেন তিনি। কিন্তু ওষুধের দাম ছাড়া কোনো ফি নেন না।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা থেকে আগত মিনারা বেগম নামে একজন রোগী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘নুরুল ইসলাম চাচার ওষুধের দাম এক টাকা থেকে ২০ টাকা মাত্র। তার কাছে চিকিৎসা নিয়ে জটিল রোগ থেকে আরোগ্য পেয়েছি। তিনি মানসম্মত সঠিক ওষুধ ব্যবহার করেন।’

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি খলিল ব্যাপারী ও রমিচ উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রায় ৪৬ বছর আগ থেকে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন নুরুল ইসলাম সরকার। সেই সময়ে এক পুরিয়ার ওষুধের দাম পাঁচ পয়সা নিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। এ কারণে পাঁচ পাইয়ের ডাক্তার হিসেবে তিনি পরিচিত। পাঁচ পাইয়ের ডাক্তার হিসেবে সবাই চিনলেও বেশিরভাগ মানুষই তার আসল নাম জানেন না। এই নাম নিয়ে নুরুল ইসলাম নিজেও গর্ববোধ করেন।

চিকিৎসক নুরুল ইসলাম সরকার বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘১৯৬৮ সাল থেকে হোমিও চিকিৎসা পেশা শুরু করি। হোমিও বিষয়ে আমার কোনো প্রশিক্ষণ নেই। নিজের চেষ্টা ও বই পড়ে চিকিৎসক হয়েছি। জীবনের বেশিরভাগ সময় চিকিৎসা সেবায় ব্যয় করেছি। যতদিন বেঁচে থাকব, সেবা দিয়ে যাব।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর