মার্চ-এপ্রিল দুই মাস মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শেষে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাত ১২টার পর থেকে লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় নামবে অর্ধলক্ষাধিক জেলে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার কারণে নদীতে নৌকা ভাসাতে আর কোনো বাধা নেই। দীর্ঘ দুই মাস পর মধ্যরাত থেকে মেঘনার বুকে আবারো ভাসবে জেলে নৌকা।
গত দুই মাসে জেলার মেঘনা নদী এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের ৮৫টি অভিযানে ৪২ জেলের কারাদণ্ড ও ৪৭ জনকে ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া জব্দ করা হয়েছে ৭ টন জাটকা, ৪১টি মৎস্য নৌকা ও ২১ লাখ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম মহিব উল্যাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে উপকূলীয় এ জেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৪৯ হাজার ৫৫৮ জন। এরমধ্যে ২৫ হাজার ৯৪৭ জেলের জন্য সরকারি খাদ্য সহায়তা বরাদ্দ হয়। এর থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ২৩ হাজার ৬১১ জন জেলে।
তবে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার তথ্য মতে, এ জেলায় প্রায় ৬২ হাজার জেলে রয়েছে। এ বঞ্চিতরাই ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও আড়তদারদের চাপ ও সংসার খরচ চালাতে মাছ শিকারে যায়। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারে গিয়ে প্রশাসনের হাতে ধরা পড়লে জেল ও জরিমানা গুনতে হয় জেলেদের।
জানা গেছে, ইলিশের অভয়াশ্রম ও জাটকা সংরক্ষণের জন্য রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত মেঘনা নদীর একশ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। নিষেধাজ্ঞা শেষে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার অর্ধলক্ষাধিক জেলে নদীতে মাছ শিকারে নামবে।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরে নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৪৯ হাজার ৫৫৮ জন। এরমধ্যে সদর উপজেলায় নিবন্ধিত জেলে ৭ হাজার ৭১৭ জন, রায়পুরে ৭ হাজার ৩২৩ জন, কমলনগরে ১৪ হাজার ২০০ জন, রামগতিতে ২০ হাজার ৩১৮ জন। এরমধ্যে জেলায় ২৫ হাজার ৯৪৭ জন জেলে খাদ্য সহায়তার অন্তর্ভুক্ত। সদরে ৩ হাজার ২৯৫ জন, রায়পুরে ৪ হাজার ২২৬ জন, কমলনগরে ৭ হাজার ১৫১ জন ও রামগতিতে ১১ হাজার ২৭৫ জন জেলে রয়েছে। বাকি ২৩ হাজার ৬১১ জন জেলে সরকারি খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম মহিব উল্যাহ জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লক্ষ্মীপুরে মাছ শিকারে নদীতে যাওয়ায় ৪২ জেলের কারাদণ্ড ও ৪৭ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শেষ। মধ্যরাত থেকে নদীতে যেতে আর কোনো বাধা নেই। তবে জাটকা শিকার বন্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।