রাজশাহী: সুপার সাইক্লোন ফণী’র বর্তমান গতিপথ অপরিবর্তিত থাকলে সেটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (৪ মে) ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে রাজশাহী বিভাগ দিয়েএই ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশে প্রবেশ করবে এবং রংপুর বিভাগ হয়ে পরদিন সকাল নাগাদ ভারতের আসামে প্রশমিত হবে।
ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাস সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট ‘উইন্ডি ডটকম’ (windy.com) থেকে পাওয়া স্যাটেলাইট চিত্রের বিশ্লেষণ থেকে এমন তথ্যই মিলছে। উইন্ডি’র তথ্য অনুযায়ী, শনিবার (৪ মে) বিকেল ৫টা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র রাজশাহী দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে। রাত ৮টা নাগাদ ফোনি’র বগুড়ায় থাকার শঙ্কা রয়েছে। রাত ১১টায় রংপুর ও রাত ৩টায় নীলফামারী হয়ে এটি বাংলাদেশ অতিক্রম করে যাবে ভারতের আসামের দিকে।
এ ধরনের সুপার সাইক্লোনের কেন্দ্রে থাকার অভিজ্ঞতা দেশের উত্তরাঞ্চলের এই জেলাগুলোর এর আগে খুব বেশি একটা হয়নি। ফলে এনিয়ে সরকার উচ্চপর্যায় থেকে রাজশাহী ও রংপুরের বেশ কয়েকটি জেলার প্রশাসককে সতর্ক করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে কাজও করছে কয়েকটি জেলার প্রশাসন।
নীলফামারীর জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন তার ফেসবুক পেজে সবাইকে সতর্ক করে জানিয়েছেন, ‘ফণী রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে। সকলকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য জোর আহ্বান করছি।’
একই বার্তা দিয়ে সতর্ক করেছেন রাজশাহী, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকও।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের বুধবার (০১) রাতে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের বলেছে যে ঘূর্ণিঝড় ফণী’র গতিপথ বারবার পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর হয়ে রাজশাহীর ওপর দিয়ে দিনাজপুর পর্যন্ত প্রবাহিত হতে পারে। এজন্য সম্ভাব্য ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি রোধে মানুষক সতর্ক করা ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা সেটি করছি।’
রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের উচ্চ পর্যবেক্ষক শহিদুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঢাকা থেকে আমাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমরাও ফোনি’র গতিপথের দিকে নজর রাখছি। তবে ১ থেকে ২৫ নম্বর বুলেটিন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টির গতিবিধি পরিবর্তিত হওয়ার রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঠিক কোন পথে ‘ফণী’ যাবে, এটা নিশ্চিত করতে আরও একদিন অপেক্ষা করতে হবে।
আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বুধবার (০১ মে) রাতে জানান, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হওয়া আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। স্থলভাগে প্রবেশের পর এর তীব্রতা বাড়তেও পারে।
অন্যদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ফণী’র এখনকার গতিবেগ এবং পথ যদি ঠিক থাকে, তবে ভারতের উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে শনিবার সকালে আমাদের দেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও মোংলায় আঘাত করবে। এটি যশোর হয়ে রাজশাহী ও দিনাজপুর পর্যন্ত প্রবাহিত হতে পারে।