রমজানে লেবু চাষির মুখে হাসি

মানিকগঞ্জ, দেশের খবর

খন্দকার সুজন হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ | 2023-08-26 17:28:46

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় অনুকূল আবহাওয়া ও যথাযথ পরিচর্যায় লেবুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তাছাড়া প্রচণ্ড গরম ও রমজান উপলক্ষে লেবুর চাহিদাও বেশি। আর চাষিরা দামও পাচ্ছে ভালো। সবমিলিয়ে লেবু চাষে বেশ লাভবান মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার চাষিরা। এতে মুখে হাসি ফুটেছে চাষিদের।

জানা গেছে, অল্প খরচে বেশি মুনাফা হওয়ায় স্থানীয় চাষিদের মধ্যে লেবু চাষে আগ্রহ বাড়ছে। লেবু চাষের জমি তৈরি, চারা বপন, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের খরচ বাবদ প্রতি বিঘায় খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা। চারা বপনের দুই বছর পর থেকে লেবু সংগ্রহ করা যায়। তবে পুরোদমে ফলন পেতে অপেক্ষা করতে হয় আরও প্রায় এক বছর। এরপর একটানা ১০-১২ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। বাৎসরিক চুক্তিতে প্রতি বিঘা জমির লেবু বিক্রি হয় ২৫-৩০ হাজার টাকায়। তবে নিজেরা চাষাবাদ করলে মুনাফা আরও বেশি হয়।

এদিকে লেবু আবাদকে কেন্দ্র করে এলাকার দুই শতাধিক যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। প্রতিদিন লেবু তুলতে পারিশ্রমিক হিসেবে প্রত্যেককে সাড়ে ৪শ থেকে ৫শ টাকা দেওয়া হয়।

সাটুরিয়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়নেই কম বেশি লেবুর চাষাবাদ হয়। তবে সাটুরিয়া সদর ইউনিয়নের বৈলতলা, বাছট, ধুল্ল্যা, হান্দুলিয়া এলাকায় সবচেয়ে বেশি লেবুর চাষাবাদ হয়। এছাড়াও ধানকোড়া, ফুকুরহাটি, তিল্লী এবং বরাইদ ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে লেবুর চাষাবাদ হয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায় এসব লেবু।

সাটুরিয়া উপজেলার কন্দপুর গ্রামের লেবু চাষি মোশারফ হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘চলতি মৌসুমে ১৩ বিঘা জমিতে লেবুর আবাদ করেছি। প্রায় পাঁচ বছর আগে মাত্র দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে এসব জমিতে লেবুর আবাদ করা হয়। দুই বছর ধরে নিয়মিত ফলনও পাচ্ছি। আর এখন রমজান মাস শুরু হয়েছে। লেবুর দাম বেড়েছে।’

বৈলতলা এলাকার লেবু চাষি আব্দুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘অন্যান্য ফসলের চেয়ে লেবু চাষে ঝুঁকি কম। অল্প খরচে অধিক মুনাফা পাওয়া যায়। প্রায় ৩০-৩৫ বছর ধরে নিয়মিত লেবু চাষ করছি। দিন দিন এলাকার চাষিদের মাঝে লেবু চাষে আগ্রহ বাড়ছে।’

লেবু ব্যবসায়ী আরশেদ আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘রাজধানীর কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী এবং কুমিল্লায় লেবুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অতিরিক্ত গরম ও পবিত্র রমজানের কারণে লেবুর বাজারদরও ভালো। ফলে লেবু চাষিদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছেন।’

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমদাদুল হক বার্তা২৪.কমকে জানান, সাটুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে এলাচি ও কলম্বো জাতের লেবুর চাষ হয়েছে। লেবু গাছে রোগবালাই এবং পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়। চলতি মৌসুমে লেবুর বাম্পার ফলন এবং ভালো বাজারদর থাকায় চাষিদের লাভ বেশি থাকছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর