বাজেটে বিড়ি শিল্পের ওপর ট্যাক্স কমানো, তামাক চাষিদের ন্যায্য মূল্য দেওয়া ও তাদের সুরক্ষার জন্য নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে নীলফামারীর তামাক চাষি সমিতি।
শনিবার (১১ মে) নীলফামারীর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেনে এসব দাবি জানান সমিতির সভাপতি হামিদুল হক চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক মাসুম ফকির।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সমিতির সহ-সভাপতি শফিকুল্ ইসলাম তুহিন, ব্যবসায়ী নেতা আয়ুব হোসেন, কৃষক নেতা সালাউদ্দিন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, দেশের উত্তরবঙ্গ বিশেষ করে বৃহত্তর রংপুরে অনেক মানুষ তামাক চাষের সঙ্গে জড়িত। কারণ এখানে তামাক ছাড়া অন্য কোনো ফসল ভালো হয় না। তামাক চাষ করেই চাষিদের জীবিকা নির্বাহ হয়। আর এ তামাক ব্যবহার হয়ে থাকে বিড়ি শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে। বিড়ির ওপর সাম্প্রতিক সময়ে মাত্রা অতিরিক্ত করারোপের ফলে কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাজার হাজার তামাক চাষি। অর্থনীতিতেও বিরুপ প্রভাব দেখা দিচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিড়ি একটি কুটির ও শ্রম ঘন শিল্প। এর সঙ্গে লাখ লাখ মানুষ জড়িত। প্রতিবেশী দেশ ভারতে যেখানে বিড়িকে কুটির শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে বিড়ির ওপর অতিরিক্ত করারোপ করে এই শিল্পকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ভারতে যে সব কারখানায় ২০ লাখ স্টিকের নিচে বিড়ি তৈরি হয় সেসব কারখানাকে কোনো শুল্ক দিতে হয় না। অথচ বাংলাদেশে সব ধরনের কারখানাকে শুল্ক দিতে হয়। ভারতের চেয়ে বাংলাদেশে শুল্ক ১৮ গুণ বেশি। ভারতে এক হাজার বিড়িতে শুল্ক মাত্র ১৪ টাকা। বাংলাদেশে ২৫২ টাকা ৫০ পয়সা।
তারা আরও বলেন, বিড়ির ওপর এই অসম শুল্কা আরোপের পেছনে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানির হাত রয়েছে। তারা সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে হাত করে বিড়ির ওপর অতিরিক্ত করারোপে ভূমিকা রাখছে। বিড়ি ফ্যাক্টরিগুলোতে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা কয়েক লাখ। সে তুলনায় সিগারেট ফ্যাক্টরিগুলোতে শ্রমিকের সংখ্যা নগণ্য। বিড়ি এবং সিগারেটের পরিবেশগত বিপর্যয়ও সম্পূর্ণ ভিন্ন। এক হিসেবে সিগারেট উৎপাদনে বছরে পরিবেশগত ক্ষতির পরিমাণ বছরে ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। সিগারেট সব দিক থেকে অর্থনীতির ক্ষতি করলেও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে শুধুমাত্র বিড়ি।