এটা কি নিউজ হওয়ার মতো ঘটনা? ৩০ লাখ ১২ হাজার ৬১২ টাকার দুর্নীতির অডিট আপত্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে এমনই উত্তর দেন পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির মজুমদার। পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অডিটে নানা খাতে বহুমুখী আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০১৬-১৭ সালের পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অডিট হয়। ওই অডিট প্রতিবেদনে বিভিন্ন খাতে এই আর্থিক অনিয়মের চিত্র উঠে আসে অডিট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মন্তব্যে।
তথ্যমতে, সরকারি পরিপত্র লঙ্ঘন করে এক খাতের টাকা অন্যখাতে ব্যয় করা হয়েছে। অডিট প্রতিবেদনে ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৪২৫ টাকা ও ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ ছাড়াই সকল বিভাগের শিক্ষক ও কর্মচারীদের মধ্যে সম্মানী বাবদ ৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫৪৮ টাকা বিতরণ এবং পরিপত্র বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন খাতের টাকা আদায়ের পরিমাণ ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪০ টাকাসহ সর্বসাকুল্যে ৩০ লাখ ১২ হাজার ৬১২ টাকার অডিট আপত্তি এসেছে। সংশ্লিষ্ট টাকা সরকারি কোষাগারে জমার কোনো ধরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। শুধু তাই নয়, গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তিমূলক কোনো জবাবও পাওয়া যায়নি বলে মন্তব্যে উল্লেখ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. প্রফেসর হুমায়ুন কবির মজুমদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪০ টাকার আপত্তির বিষয়টি গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। সবগুলো প্রায় নিষ্পত্তির দিকে এবং মীমাংসিত অবস্থায়। অডিট আপত্তি মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের রুটিন ওয়ার্ক যা একটা চলমান প্রক্রিয়া।
তিনি বলেন, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ সম্পূর্ণ বিধি মেনেই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং পরিপত্র মেনেই যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। কলেজের নানামুখী অনিয়ম ও আর্থিক খাতে ব্যাপক গড়মিলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এ ধরনের খবর কী খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা বারবার পত্রপত্রিকায় ফলাও করে ছাপাতে হবে। এ খবর না ছাপালেও হয়।
পাবনার সচেতন মহলের দাবি, উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হিসেবে খ্যাত পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ। বর্তমান অধ্যক্ষ এই প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর থেকে নানা ভাবে নানা খাতে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
তাদের অভিযোগ, সরকার দলীয় মতের প্রভাবে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির সুনাম রক্ষা, শিক্ষার মান বৃদ্ধি ও দুর্নীতি এবং নানা অনিয়ম দুর করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা যায়, অধ্যক্ষর নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন পাবনা আঞ্চলিক কার্যালয়ে। দুদক পাবনা অফিস সূত্রে জানা গেছে, অধ্যক্ষ নানামুখী অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে একাধিক অভিযোগের তদন্ত কাজও চলছে।
এদিকে, দীর্ঘদিন যাবৎ ছাত্র সংসদ কার্যক্রম পুরোপুরি স্থগিত থাকলেও ছাত্র সংসদের বিপুল পরিমাণ টাকাও নয়-ছয় করা হয়েছে এমন অভিযোগও দুদকে রয়েছে।