শসা চাষে কৃষকের মুখে হাসি

গাইবান্ধা, দেশের খবর

তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা | 2023-08-31 00:42:28

গাইবান্ধার ধাপেরহাট এলাকায় শসা চাষে কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা গেছে। এবার ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তাদের মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা।

সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি চাষ করা হয় শসা। দীর্ঘদিন ধরে প্রায় সব কৃষকই শসা আবাদ করেন। এ ফলন থেকে দিনবদলের স্বপ্ন দেখেন তারা।

এমন কৃষকের মধ্যে অন্যতম খাজা মিয়া। কৃষক পরিবারেই জন্ম। ওই ইউনিয়নের ছোট ছত্রগাছা গ্রামের তার বাড়ি। খাজা মিয়া অন্যান্য ফসল বুনলে তেমন লাভজনক না হওয়ায় শসা চাষ শুরু করেন। গত চার বছর আগে প্রতিবেশী আয়নালের শসা চাষকে অনুকরণ করেন তিনি। সেই থেকে শসা চাষ করে আসছেন খাজা মিয়া। তার উৎপাদিত শসা বিক্রি করে ইতোমধ্যে ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। এবারেও দুই বিঘা হাইব্রিড জাতের শসা চাষ করেছেন তিনি।

খাজা মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এ শসা চাষের উপযোগী সময় হচ্ছে, জৈষ্ঠ্য মাসের ১০ তারিখ থেকে শ্রাবণ মাসের ১৫-২০ তারিখ পর্যন্ত। ভাদ্র মাসের ১০ তারিখ থেকে কার্তিক মাসের ১৫-২০ তারিখ পর্যন্ত এবং মাঘ মাসের ১০ তারিখ থেকে চৈত্র মাসের ১০-১৫ তারিখ পর্যন্ত। এই সবজি চাষের সময়কাল ৬৫ থেকে ৭০ দিন এবং বীজ বপন করার ৩৫ দিন পরে ফলন আসতে থাকে। একটানা ১০ বার তিন দিন পরপর শসা উঠানো যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে শসা চাষে মোট খরচ হয় ২০ হাজার টাকা। ফলন আসে কমপক্ষে ২৪৫ মণ। যা বিঘা প্রতি শসা বিক্রি করে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। এবার ফল উৎপাদন মুহূর্তে রমজান মাস পড়ায় প্রতি মণ শসা ৬০০-৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গতবারের তুলনা দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে।

আরেক কৃষক আয়নাল হোসেন অভিযোগ করে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সবজি চাষাবাদে কৃষি বিভাগের কোনো সগযোগিতা পাওয়া যায় না। এমনকি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও মাঠে আসেন না এবং সঠিক পরামর্শ দেয় না। তাদের সাপোর্ট পেলে আরও অনেকটাই লাভবান হওয়া যেত।’

জেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘শসা বাংলাদেশের প্রধান ও জনপ্রিয় সবজির মধ্যে অন্যতম। শসা প্রধানত সালাত ও সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। শসার প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য অংশে ৯৬ শতাংশ জলীয় অংশ, ০.৬ গ্রাম আমিষ, ২.৬ গ্রাম শ্বেতসার, ১৮ মিলি গ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.২ মিলি গ্রাম লৌহ, ক্যারোটিন ৪০ মাইক্রোগ্রাম, খাদ্যপ্রাণ সি ১০ মিলি গ্রাম রয়েছে।’

সাদুল্যাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার খাজানুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বর্তমানে বেশকিছু জাতের শসার চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বিদেশি জাতের অধিকাংশই হাইব্রিড। বিএডিসি দুটি স্থানীয় জাত উৎপাদন করে থাকে বারোমাসি ও পটিয়া জায়ান্ট নামে। শসা চাষে কৃষকদের ভাল ফলন পেতে নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর