কুমিল্লায় কিশোরী নিলুফা আক্তার হত্যা মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৩ মে) দুপুরে কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতের বিচারক এমএ আউয়াল এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার মাতাইনকোট গ্রামের মকবুল আহমেদের ছেলে আবু তালেব। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। অপর আসামি জোৎস্না বেগম পলাতক রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত বার্তা২৪.কমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আবু তালেব সদর দক্ষিণ উপজেলার মাতাইনকোট গ্রামের সেলিম মিয়ার মেয়ে কিশোরী নিলুফা আক্তারকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ওই কিশোরী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এতে নিলুফা আক্তার বিয়ের জন্য আবু তালেবকে চাপ সৃষ্টি করে। ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নিলুফার বাবা সেলিম মিয়া মসজিদে গেলে আবু তালেব তাদের বাড়িতে যায় এবং নিলুফাকে ঘর থেকে বাড়ির উঠানে ডেকে নিয়ে আসে।
এ সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী একই বাড়ির আব্দুর রহমানের স্ত্রী জোৎস্না বেগম কিশোরী নিলুফার মুখ চেপে ধরে এবং আবু তালেব মিয়া তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে নিলুফার শরীরের ৮৪ শতাংশ পুড়ে যায়।
পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (কুমেক) এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে। ওই ঘটনার তিনদিন পর ২৬ জানুয়ারি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেয় নিলুফা এবং ৩১ জানুয়ারি ভোরে মারা যায়।
এ ঘটনায় নিলুফার বাবা সেলিম মিয়া বাদী হয়ে দুইজনকে আসামি করে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর দক্ষিণ মডেল থানার তৎকালীন এসআই জাহাঙ্গীর আলম ওই বছরের ১৭ এপ্রিল আদালতে দুইজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
এ মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ আদালত দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত।