‘বয়স ১৮ বছর। লেখাপড়া করছি অনার্স প্রথম বর্ষে। এরই মধ্যে আমার জীবনে প্রেম আসে। আর সুখে সংসার করার আশায় পরিবারের অজান্তে বিয়ে করে ফেলি। কিন্তু বিধিবাম, সুখ তো দূরের কথা এখন জীবন বাঁচানো দায়।’
মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলছিলেন রিতা খাতুন। তার বিয়ে হয়েছে মাত্র আড়াই মাস হলো। তবে শরীরে স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়ির করা নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে ভর্তি হয়েছেন নড়াইল সদর হাসপাতালে। সোমবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
রিতা খাতুনের স্বামীর নাম অলিদ মোল্যা। তিনি নড়াইল পৌরসভার ভওয়াখালী গ্রামের ফরিদ মোল্যার ছেলে।
জানা গেছে, গত ৩ মার্চ নড়াইল সদর উপজেলার বাকশাডাঙ্গা গ্রামের নজরুল চৌধুরীর মেয়ে রিতা খাতুন পরিবারের অজান্তে অলিদ মোল্যাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরে রিতাকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয়া হতো না। স্বামী অলিদ মোল্যা গত ১২ মে রাতে নামাজ পড়তে গেলে রিতা তার খালা ও বোনের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন।
বিষয়টি জানতে পেরে স্বামী অলিদ মোল্যা ও তার পরিবারের সদস্যরা রিতাকে মারধর করে গুরুতর জখম অবস্থায় ঘরের মধ্যে ফেলে রাখে। পরে রিতা কৌশলে তার বোনের বাড়িতে পালিয়ে যায়। গত সোমবার রাতে রিতাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রিতার চোখসহ সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আহত রিতা খাতুন বলেন, ‘পরিবারকে না জানিয়ে প্রেম করে বিয়ে করেছিলাম। কপালে সুখ জুটল না। আমরা গরিব মানুষ। তাই স্বামীর পরিবারের লোকজন আমাকে মেনে নিতে পারেনি।’
রিতা অভিযোগ করে বলেন, ‘অলিদের আগে একটা বিয়ে থাকলেও আমি জানতাম না। হায়রে প্রেম আমার। এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে কখনো ধারণা করতে পারিনি।’
রিতার মা জোসনা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে ম্যানেজমেন্ট বিভাগে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। অলিদ তাকে ভালোবেসে বিয়ে করে এখন নির্যাতন করছে। আমরা গরিব মানুষ এর বিচার কী পাব না?’
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস হোসেন জানান, স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী অলিদ মোল্যাকে আটক করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’