গত কয়েক বছরে আমে লোকসান গুনেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিরা। কেমিক্যাল যুক্ত আমের কারণেই এই লোকসান গুণতে হয়েছে। এবার এই বদনাম ঘোচাতে নানান রকম উদ্যোগ নিচ্ছেন এ অঞ্চলের আমচাষিরা। ভাল দাম পেতে ও শতভাগ নিরাপদ আম উৎপাদনে ব্যবহার করা হচ্ছে ফ্রুট ব্যাগ।
উদ্যোগটি গেল কয়েক বছর আগে নেয়া হলেও এবার অধিকাংশই আমচাষিরা তা বাস্তবায়ন করছেন। ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম শতভাগ নিরাপদ হবে বলে জানিয়েছেন চাষিসহ সংশ্লিষ্টরা। এ বছর ১২ কোটি ফ্রুট ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে।
শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিডেটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল খান শামিম জানান, সঠিক মান পরীক্ষা ছাড়াই কয়েক বছর ধরে কেমিক্যালের নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাজার হাজার মন আম রাস্তায় ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। ফলে আম উৎপাদন করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল চাষিরা।
তিনি আরও বলেন, 'চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোন আমেই কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। শুধু মাত্র ছোট আমে পোকা মাকড় দমে কৃষি বিভাগের পরামর্ষ অনুযায়ী সার বিষ দিয়ে পরিচর্যা করা হয়। তার পরেও কোন কারণ ছাড়াই গেল কয়েক বছর জেলার আম দেশের বিভিন্ন স্থানে ধ্বংস করা হয়েছে।'
বর্তমান সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রতিটি বাগানের উৎপাদিত আম বিদেশে রফতানি যোগ্য ও শতভাগ নিরাপদ বলেও দাবি করেন তিনি।
একই কথা জানান, চাঁপাই ম্যাংগোর ব্যবস্থাপক শহিদুল হক হায়দারী। তিনি বলেন, 'দেশে ও বিদেশে আম রফতানি করতে ফ্রুট ব্যাগিংয়ের মাধ্যমে আম পুষ্ট করে তোলা হচ্ছে। প্রশাসন ও স্থানীয় কৃষি বিভাগের নজরদারি বাড়ার কারণে আম চাষিরা কিছুটা আতঙ্কের মধ্যে থাকলেও চলতি মৌসুমে ন্যায্য মূল্য পেলে নিরাপদ আম উৎপাদনে আগ্রহ হবে।'
তিনি আম ভাঙার পর গাড়িতে তোলার আগে তল্লাশি করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম আমিনুজ্জামান বলেন, 'জেলার সিংহভাগ আম উৎপাদন হয় শিবগঞ্জ উপজেলায়। আমের মুকুল থেকে শুরু করে আম বাজারজাত হওয়া পর্যন্ত কৃষি বিভাগের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।'
নিরাপদ আম উৎপাদনে কৃষি বিভাগের পরামর্ষ অনুযায়ী চাষিরা ফ্রুট ব্যাগিং ব্যবহার করে নিরাপদ আম উৎপাদন করছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ১২ কোটি আমে ফ্রুট ব্যাগিং করা হয়েছে। যা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। তাতে তিন লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ হতে জেলার আম বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।