চাঁদপুরের হাইমচর থানা পুলিশের কনস্টেবল মোশারফ হোসেন হত্যার ঘটনায় থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মো. মহসীন আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে একই থানার এসআই মুকবুল, এএসআই সুমন সরকার এবং কনস্টেবল শাহাদাত হোসেনকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির পিপিএম।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এ চারজনের মধ্যে এএসআই সুমন সরকার এবং কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন কনস্টেবল মোশারফ হোসেন নিহত হওয়ার ঘটনার সময় সঙ্গে ছিলেন। এ দু’জনকে ঘটনার পরদিনই প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। আর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মো. মহসীন আলম সেদিন তার কর্মস্থলে ছিলেন এবং এসআই মুকবুল ঘটনার দিন রাতে হাইমচর থানার ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন। এ দু’জনকে দায়িত্বে অবহেলার দায়ে প্রাথমিকভাবে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পুরো ঘটনাটি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে চূড়ান্ত রিপোর্টের আলোকে ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত এবং নেপথ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন সূত্র জানিয়েছে। এ ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রধান হচ্ছেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো. মিজানুর রহমান।
উল্লেখ্য ২৬ এপ্রিল, শুক্রবার রাতে হাইমচর থানার কনস্টেবল মোশারফ হোসেন মেঘনা নদীতে নিখোঁজ হন। ঘটনার দু’দিন পর ২৮ এপ্রিল রোববার সকাল ১১টার দিকে বরিশাল জেলার হিজলা থানা এলাকায় মেঘনায় ভেসে ওঠে কনস্টেবল মোশারফের লাশ। এ ঘটনার বিষয়ে ঘটনার পরদিন ২৭ এপ্রিল শনিবার হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মো. মহসীন আলম জানান, এএসআই সুমন সরকারের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য নদীর ওপাড়ে অর্থাৎ নীলকমল ইউনিয়নের চরকোড়ালিয়া এলাকায় থানার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী ধরতে যাচ্ছিল।
তখন নদীতে একদল জেলে জাটকা ধরছিলো। জেলেরা ধারণা করেছিলো পুলিশ তাদেরকে ধরতে আসছে। তখন জেলেরা সম্মিলিতভাবে দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ হামলার সময় কনস্টেবল মোশারফ নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। ওসি আরও জানান, ঘটনার সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ঘটনার পরদিন শনিবার রাতে নিহত কনস্টেবল মোশারফের স্ত্রী শামীমা আক্তার হাইমচর থানায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তবে আসামীদের তালিকা ওসি নিজেই করেছেন বলে জানা গেছে।