ভরা মৌসুমেও মন্দা মানিকগঞ্জে শ্রমিকের হাট!

মানিকগঞ্জ, দেশের খবর

খন্দকার সুজন হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ | 2023-08-27 13:00:36

পাকা ধানের ঘ্রাণে মাতোয়ারা কৃষকের জমি। জেলার সাতটি উপজেলাতেই ধান কাটা শুরু হয়েছে পুরোদমে। তবুও মন্দা যাচ্ছে মানিকগঞ্জের শ্রমিকের হাট। প্রয়োজনের চেয়ে বাড়তি শ্রমিকের আগমনের কারণেই এমন মন্দা যাচ্ছে বলে ধারণা সাধারণ শ্রমিকদের।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের নবীন সিনেমা হলের সামনের অস্থায়ী শ্রমিকের হাটে কাজের অপেক্ষায় থাকা শ্রমিকেরা এমন বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেন।

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার নগর শ্রীরামপুর এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে আগত শ্রমিক ইদ্রিস আলী বার্তা২৪.কম-কে জানান, এক সপ্তাহ আগে কাজের সন্ধানে মানিকগঞ্জে এসেছেন তিনি। দৈনিক ৭২০ টাকার বিনিময়ে প্রথম দুই দিন কাজ করেছেন। এরপর দুই দিন কাজে নেননি কেউ। ৬৫০ টাকা ধরে আবার কাজ করেছেন পরের তিন দিন। ফের কাজে যাওয়ার অপেক্ষায় শ্রমিকের হাটে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন তিনি।

নাটোরের বাঘাতিপাড়া থেকে আগত শ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক জানান, শ্রমের বাজারদর বেশি থাকার কারণে প্রচুর পরিমাণে শ্রমিকের আগমন হয়েছে মানিকগঞ্জে। এতে করে নিয়মিতভাবে কাজ পাচ্ছেন না অনেকেই। কাজেই চাহিদা অনুযায়ী ভালো বাজারদর থাকলেও গড় হিসেবে মন্দা যাচ্ছে শ্রমিকের হাট। নিয়মিত কাজ করতে না পারলে বেশ অনিশ্চয়তায় থাকতে হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

পাবনার আতাইখোলা থেকে আগত শ্রমিক মাজেদ খান জানান, চলতি মৌসুমে শ্রমিকের বাজারদর ভালো থাকলেও শ্রমিকের চাহিদা কম। এতে করে প্রায়ই অলস থাকতে হচ্ছে অনেক শ্রমিককেই। কাজে যেতে না পারলে মানিকগঞ্জ বাস টার্মিনালে রাত্রীযাপন করতে হয়। তিন বেলা হোটেলে খাবার খেয়ে বরং পকেটের টাকা খরচ হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জেলার ঝিটকা এলাকার কৃষক আনিছুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে জানান, চলতি মৌসুমে আট বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছেন তিনি। ফলন ভালো হলেও ধান চাষে ব্যয় এবং শ্রমিকের খরচ মিলিয়ে মুনাফার কোটা শূন্যপ্রায়। আবার শ্রমিকের দামও চড়া। পুরো জমির ধান মাড়াই সম্পন্ন করা নিজেদের পক্ষেও সম্ভব নয়। যে কারণে ৬০০ টাকা করে চার জন শ্রমিক নিলেন তিনি।

জেলা কৃষি অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গ্যানেশ চন্দ্র রায় বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জ জেলায় ৪৭ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও হয়েছে ভালো।’ জেলার প্রায় সব এলাকার ধান এক সাথে পেকে যাওয়ায় কৃষকেরা এখন ধান মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন বলেও জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর