চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় নিজামপুর উনিয়নের বাইপুর গ্রামের বৃদ্ধা জহিরনের তিন প্রজন্মই স্বামী হারা। তারপরও তারা সরকারি সাহায়তা পান না। ফলে চার নারীর সংসার চলে জহিরনের ভিক্ষার আয়ে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাইপুর গ্রামের পুকুর পাড়ে দেড় শতাংশ খাস জমিতে মাটির ছোট ঘরে তাদের বসবাস। বর্ষাকালে পুকুরের পানি উঠে উঠান ডুবে যায়। গত এপ্রিলে বৃষ্টিতে রান্নাঘরটিও ভেঙে যায়।
মাটির ছোট ঘরে ঠাসাঠাসি করে থাকেন জহিরন ও তার বিধবা মেয়ে পারভিন বেগম (৩৯), পারভিনের মেয়ে রিক্তা খাতুন (১৭) ও ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুন খাতুন (৯)।
জানা গেছে, নিজামপুর ইউপির বাইপুর দক্ষিণ পাড়ার জাহাঙ্গীর আলী খাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী জহিরন (৭৮)। প্রায় ১৪ বছর আগে বিধবা জহিরনের মেয়ে পারভিনের বিয়ে হয়। কিন্তু পারভিনের ছোট মেয়ে রিক্তার বয়স যখন ২ বছর তখন তার স্বামী রফিকুল ইসলাম মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা পারভিন ২ মেয়েকে নিয়ে ফিরে আসেন মায়ের বাড়িতে।
এদিকে, পারভিনের বড় মেয়ে রিক্তার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাল্য বিয়ে হয় এলাকার এক জনৈক্য বৃদ্ধার সাথে। কয়েক বছর পর রিক্তার স্বামীও মারা যান। ফলে তিনিও ফিরে আসেন নানী ও মায়ের কাছে।
অভিযোগ আছে, জহিরনের স্বামী জাহাঙ্গীর আলীর মৃত্যুর আগেই প্রথম পক্ষের ছেলে মেয়েরা বিষয়-সম্পত্তি ভাগ করে নেন। ফলে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন তার দ্বিতীয় স্ত্রী জহিরন ও তার সন্তানরা। ফলে ভিক্ষা করে সংসার চালাতে হচ্ছে জহিরনকে।
জহিরনের মেয়ে পারভিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এ বছর ওয়ার্ড মেম্বার আমাকে ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ দিয়েছে। কিন্তু বৃদ্ধা মা জহিরনের ভিক্ষা ও আমার আয় দিয়ে ৪ জনের সংসার চালে না। ভবিষ্যতের জন্য কোনো সঞ্চয়ও করা সম্ভব হচ্ছে না। মায়ের পুনর্বাসনের বিষয়ে নিজামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি চেষ্টা করার আশ্বাস দিয়েছেন।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাবিহা সুলতানা বলেন, ‘আবেদন করলে ওই পরিবারকে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।’