ঈদে পর্যটক হয়রানি রোধে কক্সবাজারে আগাম সতর্কতা

কক্সবাজার, দেশের খবর

মুহিববুল্লাহ মুহিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কক্সবাজার, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 22:02:21

'ঈদ' মানে আনন্দ উৎসব; এই ঈদ উৎসবে কক্সবাজারে বেড়াতে আসবে দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটক। এসব ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের নিরাপত্তা ও হয়রানি প্রতিরোধ করতে আগাম সতর্ক বার্তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

সাগরের নীল জলরাশি ও প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিবছর ঈদে কক্সবাজারে বেড়াতে আসে হাজারো পর্যটক। শহরের ৪ শতাধিকের বেশি হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে এখন ‘ঠাঁই নেই’ অবস্থার সৃষ্টি। পর্যটকরা সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা, ইনানী, হিমছড়িসহ ৬টি পয়েন্ট ছাড়াও দরিয়ানগর, হিমছড়ি ঝনা, রামুর বৌদ্ধ বিহার, রেডিয়েন্ট ফিশ ওর্য়াল্ড, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, সোনাদিয়াসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরে বেড়ান। আর এসব পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আগাম সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঈদুল ফিতরে আসা পর্যটকরা যাতে কোন ধরণের প্রতারণার স্বীকার না হয় সেদিকে নজর রাখতে সব সংস্থাকে নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি হোটেল-মোটেল জোনে রুম ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায়, রুম না পাওয়া, টিকিট কাটার পরও বাস না পাওয়া, রেস্টুরেন্টগুলোতে অতিরিক্ত দামে খাবার বিক্রি, পচা বাসী খাবার পরিবেশন, দোকানদার কর্তৃক পর্যটকদের সাথে খারাপ আচরণ ও ফটোগ্রাফার-সিএনজি চালক কর্তৃক হয়রানি রোধে এ সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।

সুত্র আরও জানায়, সমুদ্র সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ ১১টি পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে তথ্য কেন্দ্র (ইনবক্স)। যে কোন অভিযোগ এখানে করতে পারবে পর্যটকরা। পাশাপাশি দেয়া হয়েছে একটি হটলাইন নাম্বার (০১৭৩৩৩৭৩১২৭)।

এদিকে পুরো শহরজুড়ে নজরদারি বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি থাকবে সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দারাও।

র‌্যাব-পুলিশ বলছে, ঈদে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা ও ব্যাংক গ্রাহকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পর্যটক নিরাপত্তায় পুরো শহরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে টহল দিবে পুলিশের কয়েকটি টিম। পুলিশের পাশাপশি র‌্যাবও শহরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চৌকি বসাবে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ঈদ উৎসবে কক্সবাজারে আগত পর্যটক হয়রানি রোধে বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ঈদের আগে কেনা-কাটা করতে আসা স্থানীয় বাসিন্দারা যাতে ইভটিজিং বা অন্য কোন ঘটনার সম্মুখীন না হয় সেদিকে নজর রয়েছে আমাদের।

তিনি আরও বলেন, শহরের ৫৪ টি স্পটে আমাদের সিসিটিভি ক্যামরা রয়েছে। যেগুলো দিয়ে পুরো শহরকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে অপরাধীকে চিহ্নিত করতে সহায়ক হবে এ ক্যামরা।

জেলা প্রশাসরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. সাইফুল ইসলাম জয় বার্তা২৪.কমকে বলেন, সৈকতের ১১ টি পয়েন্টে বিচ কর্মী, ট্যুরিস্ট পুলিশ সম্বনয়ে কাজ করছে। কিছু পয়েন্ট চিহ্নিত করে এসব পয়েন্টে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি কক্ষ ভাড়া বা খাবার নিয়ে যাতে পর্যটকরা হয়রানির শিকার না হয় সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের এসপি মো. জিল্লুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, এবারের ঈদে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসবেন কক্সবাজারে। এ উৎসবে যেন পর্যটকরা কোনো ধরনের হয়রানি কিংবা দুর্ঘটনায় কবলে না পড়েন সেজন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পর্যটক জোনগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া পর্যটকদের তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সেবা নিশ্চিত করা হবে।

কক্সবাজার র‌্যাব ১৫ এর অধিনায়ক উইন কমান্ডার আজিম আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, মাদক বিরোধী অভিযানে র‌্যাবের যেমন কঠোর ভুমিকা রয়েছে। তেমনি পর্যটন এলাকা হিসেবে কক্সবাজারে আগত দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তায় র‌্যাব সব সময় কাজ করছে। তবে ঈদকে সামনে রেখে অপরাধীরা সক্রিয় হয়ে উঠে। তাই তল্লাশি চৌকির পাশাপাশি থাকবে র‌্যাবের টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর