নড়াইলের লোহাগড়া পৌর এলাকার পোদ্দারপাড়া গ্রামের মৃত চিত্ত রঞ্জন রায়ের স্ত্রী শেফালী রায়। এই বৃদ্ধা তার স্বামীর রেখে যাওয়া ভিটাতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চান। কিন্তু তার সন্তানরা চায় না বৃদ্ধ মা তাদের সঙ্গে থাকুক।
শেফালী রায়ের ২ ছেলে ও ৪ মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে শংকর রায় কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ছিলেন। অপর ছেলে বিশ্বনাথ রায় যশোরের ঢাকা রোডে মোটর পার্টস ব্যবসায়ী। তিনি স্ত্রী কৃষ্ণা রায় ও সন্তানদের নিয়ে যশোরে বাসা ভাড়া করে বসবাস করেন। মায়ের তেমন একটা দেখভাল করেন না তিনি।
আর শংকর রায় বাবার রেখে যাওয়া প্রায় অর্ধকোটি টাকার ভিটা জমির ওপর দ্বিতল ভবনে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছেন। মেয়ে মিনতী সাহা, কনিকা সাহা, মনিকা সাহা ও ছবি রাণী সাহার ভালো ঘরে বিয়ে হয়েছে।
সকলেই স্বামী-সন্তানদের নিয়ে ভালো থাকলেও বৃদ্ধা মায়ের দায়িত্ব নিতে চান না কেউই। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ মে) বড় ছেলে শংকর রায় মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। নিরুপায় হয়ে ওই বৃদ্ধা মা স্থানীয় একটি মন্দিরে আশ্রয় নেন। রাত ১১টা বেজে গেলেও সন্তানরা তার খোঁজ নিতে আসে না। পরে মধ্যরাতে সাংবাদিকদের উপস্থিতির খবর পেয়ে মাকে ফিরিয়ে নিতে আসে শংকর রায়।
বৃদ্ধা শেফালী রায় অভিযোগ করে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ছেলে ও ছেলের বৌ আমাকে সব সময় মারধর করে। ঠিকমতো খেতে দেয় না। ইচ্ছা ছিল স্বামীর ভিটায় বাকি জীবন কাটাব। কিন্তু তারা আমাকে সোমবার (২৭ মে) রাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলে। তা না হলে মেরে ফেলবে। তাই মঙ্গলবার (২৮ মে) প্রাণ ভয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছি। সকাল থেকে কেউ আমাকে দেখতে আসেনি। আমি আমার স্বামীর ভিটায় ফিরে যেতে চাই।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানায়, বৃদ্ধা শেফালী রায় প্রতিদিন তার ছেলে ও ছেলের বউয়ের করা নির্যাতন সহ্য করেন।
সাংবাদিকদের উপস্থিতির খবর পেয়ে মাকে নিতে এসে ছেলে শংকর রায় বলেন, ‘মা রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছে। আমি মাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে এসেছি।’
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকাররম হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি আমি জানি না।’