রাজধানী ও জেলা শহরের শপিং মলের মতো জমকালো আলোকসজ্জা নেই। নেই লোভনীয় র্যাফেল ড্র কিংবা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। তারপরও জমে উঠতে শুরু করেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ফুটপাতের ঈদ বাজার।
প্রচণ্ড রোদ ও ধুলাবালি উপেক্ষা করে নিম্ন আয়ের মানুষ ঈদের কেনাকাটার জন্য বেছে নিচ্ছে ফুটপাতের দোকানগুলোকে। এসব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রিপিস, পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট, জুতা, বাচ্চাদের কাপড়, প্রসাধনী, সুগন্ধি, আতর-টুপি সহ সব কিছু। দামও নাগালের মধ্যে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এ বছর ধানের বাজারমূল্য কম হওয়ায় গতবারের তুলনায় বিকিকিনি কম। তবে চাঁদ রাতে (ঈদের আগের দিন) উপজেলার বাইরের কর্মজীবী মানুষজন এলাকায় ফিরলে বিকিকিনি বাড়বে।
বুধবার (২৯ মে) পৌর শহরের উত্তর বাজার, মধ্যবাজার, হারুনপার্ক এলাকার ফুটপাতের ঈদ বাজার ঘুরে দেখা যায়, সড়কের পাশে দোকান সাজিয়ে তাতে বিকিকিনি করছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষরাই ফুটপাতের বাজারের মূল ক্রেতা। তবে মধ্যবিত্তরাও একটু কম দামে পছন্দের পণ্যটি কিনতে ফুটপাত চষে বেড়াচ্ছেন।
ঈদের কেনা-কাটা করতে আসা আমিরুল মিয়া জানান, ফুটপাতে অনেক দোকান ঘুরে পছন্দের জিনিস কেনার ভালো সুযোগ রয়েছে। নিজের জন্য ২০০ টাকায় শার্ট ও স্ত্রীর জন্য ৪০০ টাকায় একটা শাড়ি কিনেছেন তিনি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে ছোটদের জিন্স প্যান্ট ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, বড়দের প্যান্ট ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। শার্ট ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। বাচ্চাদের পোশাক ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, থ্রিপিস ৩৬০ থেকে ৭০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। লুঙ্গি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, শাড়ি ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
ফুটপাতের দোকানে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা সালাম নামে এক ব্যক্তি জানান, তিনি তার মা এবং স্ত্রীর জন্য ২টি শাড়ি কিনেছেন। দাম ৮০০ টাকা। এখন নিজের জন্য একটি লুঙ্গি কিনবেন।
জুতাও আছে ফুটপাতে। ছেলেদের বিভিন্ন দামি ব্র্যান্ডের আদলে সাধারণ স্যান্ডেল ২০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। মেয়েদের জুতার দাম ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা।
জামাকাপড় কেনার পাশাপাশি ঈদের নামাজে যাবার প্রস্তুতি সামগ্রী কিনতে আতর, টুপির দোকানে ভিড় দেখা গেছে। বিভিন্ন আতরের দোকানে শাহী দরবার, হাসনা হেনা, বেলি আতর ও সুরমা পাওয়া যাচ্ছে। দাম ১০ থেকে ৩০ টাকা। প্রকারভেদে টুপি পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ৭০ টাকায়।
ফুটপাতে কেনাকাটা করতে আসা শরীফা আক্তার জানান, ফুটপাতের দোকানের জিনিসগুলো তুলনামূলক সস্তা। তবে দেখেশুনে না কিনলে দোকানি নিম্নমানের পণ্য গছিয়ে দিতে পারে।
ব্যবসায়ী সুমন মিয়া বলেন, ‘কমেবেশি বেচাকেনা হইতাছে। তয় ব্যবসায়ীরা চাঁন রাইতের অপেক্ষায় আছে। ওই দিন বেচাকেনা ভালো হয়।’