প্রচণ্ড গরম আর তীব্র তাপ উপেক্ষা করে পাবনার ঈদ মার্কেটগুলোতে ভিড় বেড়েছে কয়েকগুণ। দীর্ঘ সময় কাটিয়ে বিপণি বিতানগুলো থেকে পছন্দের পণ্যটি কিনে বাড়ি ফিরছেন ঈদবাজারে আসা ক্রেতারা।
ক্রেতাদের অভিযোগ, এবার ঈদের পোশাকে গলাকাটা দাম নিচ্ছেন দোকানিরা। বিশেষ করে রেডিমেড পোশাকের দাম বেশি। বিপণি বিতানগুলো একদরের নামে গলাকাটা দাম রাখছেন।
পাবনা শহরের খান বাহাদুর শপিং সেন্টারে পোশাক কিনতে আসা কলেজ ছাত্র মানিক বলেন, ‘গত বছর যে পাঞ্জাবি কিনেছি ১ হাজার ৫০০-৬০০ টাকায় সেটা এবার ১ হাজার ৯শ টাকা।’
ওই মার্কেটে আশা আরেকজন ক্রেতা মশিউর রহমান বলেন, ‘রোজার এক মাস আগে যে শার্ট ১২শ টাকায় বিক্রি হয়েছে এখন তা ১,৪৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এআর শপিং কমপ্লেক্সের ক্রেতা এক গৃহিনী আসমা বানু বলেন, ‘সাধারণ একটি থ্রি-পিস যা আগে এক হাজার টাকায় বিক্রি করা হতো। ঈদ মার্কেটে সেটার বিক্রি করা হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকায়।’
মধ্যবিত্তদেরও পছন্দের জামা ক্রয় করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য জেলাগুলোর দোকানে ক্রয়মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে পোশাক বিক্রি করার অভিযোগে অভিজাত শপিংমলে অভিযান চালানো হলেও পাবনার প্রশাসনের চোখে পড়ছে না।
অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের হাত থেকে বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের দাবি জানান তারা।
শহরের এর আর শপিং কমপ্লেক্স, সেভেন স্টার, নিউমার্কেট, হাজী মার্কেট, খানবাহাদুর মার্কেট, হুমায়রা মার্কেট, এআর প্লাজা, এআর কর্ণারসহ শহরের বিভিন্ন এলাকার মার্কেটে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পোশাকেই বেশি জমজমাট দেখা গেছে। বিপণি বিতানগুলোতে বাহারি নাম আর ডিজাইনে মেয়েদের পোশাকই উজ্জ্বলতা বাড়িয়েছে ঈদ বাজারের।
দোকানিরা বলছেন, এ বছর ঈদ বাজারে মেয়েদের ঘাগরা, হুররম আর ভেল্কি এই তিনটি পোশাকের প্রতিই বেশি ঝোঁক সবার। এর মধ্যে হুররমই এবার বেশি সাড়া ফেলেছে। জনপ্রিয় তুর্কি টিভি সিরিয়াল সুলতান সুলেমানের বেগম হুররমের নামানুসারে নাম রাখা হয়েছে পোশাকটির।
এছাড়া ইন্ডিয়ান টিস্যু কাপড়ের নানা আইটেমের পোশাকও নজর কাড়ছে এদেশের নারীদের। তবে শাড়িরও চাহিদা রয়েছে এক শ্রেণীর নারীদের কাছে।
এছাড়া বরাবরের মতো ছেলেরা শার্ট-প্যান্টের পাশাপাশি কিনছেন পাঞ্জাবি। শিশুদের জন্য রয়েছে রং বাহারি নকশাদার পোশাক। তবে গরমের কারণে এসব পোশাকের মধ্যে সুতি পোশাকের চাহিদা বেশি।
বিভিন্ন শপিংমলের স্বত্বাধিকারীরা বলেন, ‘এবার ঢাকা থেকে বেশি দাম দিয়ে থ্রি-পিস কিনতে হয়েছে। বিশেষ করে হাতের কাজ করা থ্রি-পিসের বেশ দাম দিতে হয়েছে।’
এদিকে, সারা বছর যেমন-তেমন হলেও উৎসব আয়োজনে শাড়ি পরার আগ্রহ থাকে কমবেশি সবার। ঈদ বাজার ঘুরে জানা যায়, বিদেশি শাড়ির তুলনায় দেশি শাড়ির চাহিদা সব থেকে বেশি। এবারের ঈদে বেনারসির কিছু নতুন কালেকশন এসেছে। রঙের ক্ষেত্রে হালকা রঙকেই প্রাধান্য দিয়েছেন ফ্যাশন ডিজাইনাররা। দেড় হাজার থেকে শুরু করে ১৫-২০ হাজার টাকা দামেরও শাড়ি রয়েছে এসব ফ্যাশন হাউজগুলোতে। ক্রেতারা দাম এবং মান ভেদে এসব শাড়ি কিনছেন।
মার্কেটে শাড়ি কিনতে আসা ফাল্গুনী, অনন্যা, শর্মিলাসহ বেশ কয়েকজন নারী ক্রেতার সাথে আলাপকালে তারা জানান, শাড়ির রং হিসেবে হালকা ও উজ্জ্বল রঙের শাড়িই তাদের প্রথম পছন্দ। তবে ভারি কাজ করা শাড়িও খুঁজছেন তারা।