পাবনার ঈশ্বরদী খায়রুজ্জামান বাস টার্মিনাল থেকে আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের ২ নারী সদস্যসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় ১৭ বছর বয়সী এক যুবতীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (২৯ মে) রাতে তাদের আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের ভারত-বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান সমন্বয়কারী জয়িতা মান্না ওরফে পিউ ওরফে খাদিজা (৩৫), সানন্দা বিশ্বাস (২৭) ও বিশ্বজিৎ (৩২) টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার ধোপাকান্দি গ্রামের ব্যবসায়ী আখতারুজ্জামানের মেয়ে আয়েশাকে (১৭) পাচারের উদ্দেশে ঈশ্বরদী হয়ে ভারত নিয়ে যাচ্ছিল।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকী জানান, তিনজনের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় বাসস্ট্যান্ড থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ নিশ্চিত হয়, তারা আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পুলিশ এ সময় তাদের কাছ থেকে আয়েশা নামের এক যুবতীকে উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত আয়েশা টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার ধোপাকান্দি গ্রামের ব্যবসায়ী আখতারুজ্জামানের মেয়ে।
পুলিশ জানায়, আটক জয়িতা ভারতের কলকাতার বোসপুকুর পূর্ব পাড়ায় বসবাস করেন। তার স্বামীর নাম সুমন্ত মান্না। সানন্দার বাবার নাম মহানন্দ বিশ্বাস। তিনি কলকাতার এইচআইজিএল ১/১ বিরাটি হাউজিং এস্টেটের বাসিন্দা এবং বিশ্বজিৎ ঈশ্বরদী স্কুলপাড়ার মৃত সুনিলের ছেলে।
ঈশ্বরদী থানায় উদ্ধারকৃত আয়েশা পুলিশকে জানান, প্রতিবেশী কবিরাজ আব্দুস ছাত্তারের বাড়িতে সম্প্রতি জয়িতার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এই পরিচয়ের সূত্র ধরে উভয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায়। জয়িতা এক পর্যায়ে আয়েশাকে কলকাতায় নায়িকা ও মডেল বানিয়ে মোটা অংকের টাকা রোজগারের ব্যবস্থা করে দেয়ার লোভ দেখায়। আয়েশা এ কথায় প্রলুব্ধ হয়ে গোপনে তার সঙ্গে ভারতের উদ্দেশে গত ২৮ মে টাঙ্গাইল থেকে রওনা দেয়। ঈশ্বরদী এসে বিশ্বজিতের বাড়িতে রাত্রী
যাপন করে তারা।
পুলিশ আরও জানায়, ভারত থেকে পাসপোর্ট নিয়ে জড়িত দুই নারী বাংলাদেশে এসে বোরকা পরিহিত অবস্থায় উঠতি বয়সী মেয়েদের নানা প্রলোভন দিয়ে আসছিল। সুযোগ বুঝে ওই সকল নারীদের ভারত দিয়ে বিভিন্ন দেশে পাচারের চেষ্টা করছিল।
ওসি ফারুকী জানান, আয়েশার বাবা ব্যবসায়ী আখতারুজ্জামান সংশ্লিষ্ট থানাতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। রাতেই ঈশ্বরদী পুলিশ ভিকটিম ও আসামিদের টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।