‘ঝড় উঠলেই দুঃশ্চিন্তায় পড়ে যাই। প্রবল বাতাসে কেঁপে ওঠে দালান। ফাঁটল দিয়ে পানি এসে ঘর ভেসে যায়। ঝড়-বৃষ্টির প্রতিটি দিন বিভীষিকার মধ্য দিয়ে যায় আমাদের। পরিবার পরিজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি, কখন ভেঙে পড়ে।’
কথাগুলো বার্তা২৪.কমকে বলছিলেন লাখাই উপজেলার স্বজনগ্রামের টাউনশিপের পরিত্যক্ত ভবনের বসবাসরত বাসিন্দা বোদন মিয়া।
তিনি আরও বলেন, ‘পরিত্যক্ত ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে না থেকে উপায় নেই। নিজের কোনো জমি থাকলে চলে যেতে পারতাম। যেহেতু নিজের কোনো জমি নাই সেহেতু এখানে প্রাণহানির ঝুঁকি থাকলেও বসবাস করতে হচ্ছে।’
শুধু বোদন মিয়াই নন। ওইখানে ১০ থেকে ১২টি পরিবারের প্রায় শতাধিক লোকজন প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। অথচ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি অথবা প্রশাসন তাদেরকে উচ্ছেদে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।
জানা যায়, লাখাই উপজেলার স্বজনগ্রামের ওই ভবনগুলো ব্রিটিশ আমলের ভিত্তশালী প্রিয়নাথ দত্তের বংশধরদের। স্বাধিনতার পূর্বে তারা সবাই দেশ ছেড়ে চলে গেলে ভবনগুলো পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে স্বাধিনতার পর ওই ভবনগুলোতে স্থানীয় কিছু লোক বসবাস শুরু করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেগুলো সংস্কার না করায় বর্তমানে জরাজির্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনগুলোর অনেক স্থানে ধ্বস দেখা দিয়েছে। অথচ এই ভবনগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করে আসছে ১০ থেকে ১২টি পরিবার।
ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবনগুলো কর্তৃপক্ষ বসবাসের অযোগ্য ঘোষণা করলেও ভাঙার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি এখনো। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।
তাদের দাবি, এসব বাস্তুচ্যুত লোকজনের জীবনের কথা চিন্তা করে এবং বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবন ভেঙে দিয়ে তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া দ্রুত করা হোক।
এ ব্যাপারে জানতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ রূপমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা আক্তার বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি ততটা অবগত না। তবে এখন যেহেতু জানতে পেরেছি সেহেতু খোঁজ নিয়ে দেখব।’