জেলে পল্লীর শিশু ময়না আক্তার। বয়স তার পাঁচ বছর। সবার ছোট মেয়েটি বাবা মায়ের বেশ আদরের। এই বয়সটিতে কিছুই বুঝে না সে। তবে প্রতিদিনই বাবা-মায়ের কাছে বায়না ধরে নতুন জামার।
কিন্তু ঈদ উপলক্ষে নতুন জামা কিনে দিতে পারেননি তার বাবা। নদীতে না যাওয়ায় তার বাবার সামর্থ্য হয়ে উঠেনি নতুন জামা কেনার। অবশেষে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে নতুন জামা পেয়ে খুশি হয়েছে ময়না। এখন সে ঈদের দিন অন্যদের মতো নতুন জামা পড়বে।
ময়না লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর কালকিনি ইউনিয়নের মতিরহাট এলাকার বেড়িবাঁধ এলাকার জেলে ইসলাম মাঝির মেয়ে। তার মায়ের নাম তৈয়বা খাতুন। তার পরিবারে ভাই ফয়সাল ও আরেক বোন সুমিও রয়েছে।
রোববার (২ জুন) বেলা যখন দুপুর ১২টা ঠিক তখন ময়নার দেখা মেলে বাড়ির সামনে বেড়িবাঁধের ওপর। খালি গায়ে দাঁড়িয়ে ছিল ময়না।
জানতে চাইলে সে জানায়, তার বাবা অনেকদিন নদীতে যায় না। এজন্য তার বাবার কাছে কোনো টাকা পয়সা নেই। ধার-দেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে। তাই ঈদের জন্য নতুন জামা কিনে দিতে পারছেন না। সে এটাও জানায়, এসব কথা তার মা তাকে বলেছিল।
ময়না আরও জানায়, শুধু সে নয়, তার ভাই-বোনও নতুন জামা পায়নি। দুই-একদিন সে কান্নাকাটিও করেছে। সর্বশেষ কবে তার বাবা নতুন জামা নিয়ে দিয়েছে তা বলতে পারেনি সে।
জানতে চাইলে ময়নার মা তৈয়বা খাতুন বলেন, ‘কারো হাতে নতুন জামা দেখলেই ছুটে আসে আমার কাছে। কিন্তু কিছুই করার নেই। নদীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য গত একমাস থেকে তার বাবা নদীতে যাননি। ধার-দেনা করে কোনো রকম সংসার চালাতে হচ্ছে।’
‘ছেলে-মেয়েদের নতুন জামা-কাপড় কেনে দেওয়ার অবস্থা এখন আমাদের নেই। তবে স্বেচ্ছসেবী ভাইদের দেওয়া নতুন জামা পেয়ে আমার মেয়েটি অনেক খুশি হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, অনলাইনভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন প্রিয় লক্ষ্মীপুর জেলার পক্ষ থেকে ময়না ও তার ভাইবোনসহ জেলে পল্লীর শতাধিক শিশুকে ঈদ উপলক্ষে নতুন জামা দেওয়া হয়েছে।