বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় এক পীরের অনুসারী পাঁচ শতাধিক পরিবার বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছে। পরিবারগুলো ওই পীরের নির্দেশে বুধবার ঈদ উদযাপন করা থেকে বিরত থাকে।
বৃহস্পতিবার (০৬ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় শাজাহানপুর উপজেলার পারতেখুর গ্রামে ফতেহিয়া ওয়ায়সিসা দরবার শরিফ প্রাঙ্গণে ঈদের নামাজ আদায় করেন ওই পরিবারগুলোর পুরুষ সদস্যরা। নামাজে ইমামতি করেন শাহ সুফী হযরত মাওলানা ডা. মো. আব্দুল মান্নান পীর কেবলা সাহেব। তিনি পারতেখুর গ্রামের বাসিন্দা এবং বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
সরেজমিনে পারতেখুর গ্রামে গেলে পীরের অনুসারীরা জানান, মাওলানা ডা. আব্দুল মান্নান নন্দীগ্রাম উপজেলার আইল পুনিয়া গ্রামের দরবারে মোজাদ্দেদিয়ার (ফুরফরা শরিফ) পীর কেবলা। তিনি নিজে এবং তার অনুসারীদের কেউ মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ স্বচোখে না দেখায় বুধবার ঈদ উদযাপন করা থেকে বিরত থাকেন।
পারতেখুর গ্রামের বাসিন্দা এবং পীরের অনুসারী আবু জাফর বার্তা২৪.কমকে বলেন, বুধবার স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে পীরের অনুসারীদের সাথে ঈদের নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। প্রতি বছর ডা. আব্দুল মান্নান পারতেখুর ঈদগাহ মাঠে ইমামতি করেন। কিন্তু বুধবার তিনি আসেননি। স্থানীয় আহম্মেদ আলী মুন নামে একজন ইমামতি করেছেন।
ডা. আব্দুল মান্নার পরিচালিত পারতেখুর কাসেমিয়া গিয়াসিয়া দারুস সুন্নাহ হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল মোত্তালিব বার্তা২৪.কমকে বলেন, পীর সাহেবের অনুসারীরা বৃহস্পতিবার ঈদ উদযাপন করেছেন। তিনি বুধবার ঈদ উদযাপন করতে কাউকে নিষেধ করেননি। তার অনুসারীদের তিনি মঙ্গলবার বলেছেন আমি বুধবার রোজা রাখব। তোমরা ইচ্ছা করলে রোজা রাখতে পারো না চাইলে ঈদ উদযাপন করতে পারো।
ওই গ্রামের বাসিন্দা জাকারিয়া জানান, বৃহস্পতিবার সকালে পীরের অনুসারী পাঁচ শতাধিক মানুষ পীরের মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। এসব পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার ঈদ উদযাপন করছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার ঈদ উদযাপনের খবর পেয়ে শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন পারতেখুর গ্রামে যান। এ সময় তিনি দরবার শরিফে উপস্থিত লোকজনের সঙ্গেও কথা বলেন।
পীর ডা. আব্দুল মান্নানের সঙ্গে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।