নুরুজ্জামান। বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর। বর্তমানে মোটরসাইকেল শ্যাম্পু-পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তার ডান পায়ে কিছুটা সমস্যা আছে। শারীরিকভাবে কিছুটা প্রতিবন্ধী। অবশ্য কোনো প্রতিবন্ধী ভাতা পান না তিনি। এর আগে নুরুজ্জামান ফেরি করে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।
শহর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়কের পৌর এলাকার ওয়াপদা গেট সংলগ্ন মহাসড়কের পাশেই মোটরসাইকেল পরিষ্কার করেন নুরুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকেলে কথা হয় তার সঙ্গে। নুরুজ্জামান বলেন, ‘আগে শাড়ি-কাপড় ফেরি করে গ্রামে গ্রামে বিক্রি করতাম। অসুস্থ হওয়ার পর ডান পায়ে সমস্যা দেখা দেয়। এখন সুস্থ হলেও আগের মতো স্বাভাবিকভাবে হেঁটে কাজ করতে পারি না। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তার ধারে পৈত্রিক সূত্রে একখণ্ড জমি পেয়েছি। ওই জমিতে মাটি তুলে উঁচু করে মোটরসাইকেল পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করেছি। মোটরসাইকেল পরিষ্কার করার জন্য মোটর, পেশার মেশিন ও ডিজেল মেশিন এবং বিদ্যুৎ সংযোগ লাগিয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে।’
নুরুজ্জামান বলেন, ‘খুব বেশি ছোটাছুটি করতে হয় না বলে কাজটা আমার কাছে সহজ মনে হয়। প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫টি মোটরসাইকেল পানি, ডিটারজেন্ট গুড়া ও শ্যাম্পু দিয়ে সাধারণত পরিষ্কার করা হয়। এছাড়া ডিজেল ওয়াশও করা হয়। পানি, ডিটারজেন্ট বা শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করলে ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। এ কাজে প্রতিটি গাড়িতে ১৫-২০ টাকা খরচ হয়। আর ডিজেল ওয়াশ করে দিলে ১০০-১২০ টাকা পাওয়া যায়। এই গাড়ি পরিষ্কার করতে আমার খরচ হয় ৩০-৩৫ টাকা।’
এখান থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে ভালোভাবেই চলে যায় নুরুজ্জামানের সংসার। সংসার জীবনে তিনি এক কন্যা সন্তানের বাবা। ঈদের ১০ দিন আগে এবং ১০ দিন পরে তার কাজের খুব চাপ থাকে। কারণ এই সময়ে তাকে অনেক মোটরসাইকেল পরিষ্কার করতে হয়। এ সময়ে হেলপার হিসেবেও কয়েকজনকে কাজে নেন নুরুজ্জামান।
তিনি জানান, শহরতলীতে বর্তমানে কমপক্ষে ৫০ জন এই পেশা বেছে নিয়েছেন। ফলে কাজের চাপ কমেছে। তারপরও যে আয় হচ্ছে তা খারাপ নয়।