একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে হাসপাতাল!

মানিকগঞ্জ, দেশের খবর

খন্দকার সুজন হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ | 2023-08-03 00:49:23

প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল ও চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। তবে অবকাঠামোগত দিক দিয়ে সবকিছু ঠিক থাকলেও ওই হাসপাতালে এখনো ৫০ শয্যার জনবল নিয়োগ করা হয়নি।

৩১ শয্যার চিকিৎসকও নেই পুরোপুরি। আবার যে কয়জন চিকিৎসক রয়েছেন সেখান থেকে ট্রেনিং আর সংযুক্তি জনিত কারণে হাসপাতালে উপস্থিত নেই বেশ কয়েকজন। ৫০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী, বহির্বিভাগ এবং জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দিচ্ছেন একজন মাত্র চিকিৎসক।

এ কারণে উপযুক্ত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দৌলতপুর এলাকার সাধারণ মানুষ। আর্থিক অবস্থা সম্পন্ন ব্যক্তিরা মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতাল বা প্রাইভেট ক্লিনিকমুখী হলেও ভোগান্তি পোহাচ্ছে অর্থবিত্তহীন পরিবারের লোকজন। বাধ্য হয়েই ওই হাসপাতাল থেকে সেবা নিতে হচ্ছে তাদের।

এদিকে অপারেশন থিয়েটারের সকল যন্ত্রপাতি সচল থাকলেও তা চালু হয়নি জনবলের অভাবে। জনবল সংকট আর সংযুক্তি জনিত কারণে এমন পরিস্থিতি বলে মন্তব্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল সমস্যার সমাধান করে উন্নত সেবার প্রত্যাশায় এলাকাবাসীরা।

শনিবার (১৫ জুন) সকাল ১০ থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে সরেজমিনে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। হাসপাতালে ভর্তি থাকা ৩০ জন রোগী এবং জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে আগত দুই শতাধিক রোগীর সেবায় একজন মাত্র মেডিকেল অফিসার নিয়োজিত রয়েছেন। হাসপাতালের বাকি চিকিৎসকেরা ট্রেনিং ও সংযুক্তিতে রয়েছেন।

হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক রোগীর স্বজন বার্তা২৪.কমকে জানান, হাসপাতালে ভর্তি থাকার মতো কোনো পরিবেশ নেই। চিকিৎসকও কম। নার্সরাই ভরসা। এতো গরমের মধ্যেও অধিকাংশ ফ্যান নষ্ট। খাবারের মান খুব খারাপ। তারপরও আর্থিক অভাব অনটনের জন্য বাধ্য হয়েই এখানে ভর্তি থাকতে হয়। তবে দ্রুত এ অবস্থার পরিবর্তন চান তিনি।

হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম-হিসাব রক্ষক আব্দুল বাতেন বার্তা২৪.কমকে জানান, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক, জুনিয়র কনসালটেন্টের (মেডিসিন, গাইনি, পেডিয়াটিক্স, অ্যানেসথেসিয়া) পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। হাসপাতালে ২ জন মেডিকেল অফিসার, একজন জুনিয়র কনসালটেন্ট ও উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা অফিসার রয়েছে।

এ বিষয়ে হাসপাতালের সেবায় নিয়োজিত মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আরাফাত খান বার্তা২৪.কমকে জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ঢাকায় ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। মেডিকেল অফিসার ডা. সোলায়মান খান মানিকগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্তিতে রয়েছেন। আর জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আক্তারুজ্জামান মামলার সাক্ষ্য দিতে পূর্বের কর্মস্থলে গেছেন। এ কারণে পুরো হাসপাতালে একা চিকিৎসা দিচ্ছেন তিনি।

দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রহমান বার্তা২৪.কমকে জানান, জনবল সংকটের কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও উন্নত সেবা দেওয়ার সাধ্য নেই। তবে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকরা প্রয়োজনের চেয়ে অধিক সময় রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। জনবল সংকটের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর