ময়মনসিংহের গৌরীপুরে মাওহা ইউনিয়নের তিন গ্রামের বাসিন্দারা স্বেচ্ছাশ্রমে ছোট দিঘা খালের উপর বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন। গত বুধবার বাড়ি বাড়ি ঘুরে বাঁশ সংগ্রহ করে খালের উপর সাঁকো নির্মাণ কাজ শুরু করেন স্বেচ্ছাসেবকরা। আর শুক্রবার কাজ শেষ হলে গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় সাঁকোটি।
এ বিষয়ে মদনপুর শাহ সুলতান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মঞ্জুরুল হক মঞ্জু বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে খালের উপর একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু ওই সাঁকো পার হতে গিয়ে শিশু, শিক্ষার্থী, বৃদ্ধদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো। তাই গ্রামবাসীর উদ্যোগেই এবার পাটাতন দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সরকারের কাছে আমরা দ্রুত পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাওহা ইউনিয়নের কাচারী বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট দিঘা খাল। খালের পশ্চিম পাড়ে নয়নগর গ্রাম ও পূর্বপাড়ে নিজ মাওহা গ্রাম। স্বাধীনতার আগে থেকেই ইউনিয়নের নয়নগর, বাউশালী পাড়া, কুশ্বপাড়া, নিজ মাওহা, লক্ষ্মীনগর বড়ইকান্দাসহ ছয় গ্রামের শত শত মানুষ বাঁশের সাঁকো দিয়ে খাল পারাপার হতেন। খালের পূর্বপাড়ে মাওহা উচ্চ বিদ্যালয়, নিজ মাওহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পশ্চিমপাড়ের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। কিন্তু খালের উপর সেতু না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হতে হয় শিক্ষার্থীদের।
এদিকে চলতি বছর মগড়া খালের ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই স্থানীয় নয়নগর, বাউশালী ও নিজ মাওহা এই তিন গ্রামের বাসিন্দারা স্বেচ্ছাশ্রমে খালের উপর ৫০ ফটু দৈর্ঘ্যের সাঁকো নির্মাণ করেন।
নয়নগর গ্রামের বাসিন্দা আজহারুল করিম বার্তা২৪.কমকে জানান, ছোটদিঘা খালের উপর সেতু না থাকায় ছয় গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে খাল পারাপার হতে হয়। গত বছর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খাল সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করে পাকা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিলেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বার্তা২৪.কমকে জানান, ওই ইউনিয়নে একটি পাকা সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেতু নির্মাণের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন।