ক্ষুদ্রাকৃতির ঝোপালো গাছ। শাখা-প্রশাখা জুড়ে গাঢ় সবুজ পাতা। সেই পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে গোলাপী রঙের ফুল। নাম সন্ধ্যামালতী। শনিবার (২২ জুন) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের বিজয় একাত্তর প্রাঙ্গণে দেখা মেলে সন্ধ্যামালতী ফুলের।
সন্ধ্যা হতে না হতেই ফুটে, তাই এর নাম সন্ধ্যামালতী। সারা রাতব্যাপী ফুলেরা থাকে প্রস্ফুটিত, অমলিন এবং সূর্যের আলোয় ফুলগুলো ঝিমিয়ে যায়।
এ ফুলের আদি নিবাস আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার পেরুর বনাঞ্চল। এ ফুলের পরিবার Nyetaginaceae, উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Mirabililis jalapa। বাংলাদেশে সন্ধ্যামালতী জনপ্রিয় একটি ফুল। অঞ্চলভেদে এ ফুল ‘সকাল-সন্ধ্যা’, ‘সন্ধ্যামণি’ ও ‘কৃষ্ণকলি’ নামেও পরিচিত।
সন্ধ্যামালতী ফুল সাধারণত বসতবাড়ি সাজানো ও শোভাবর্ধনের কাজে ব্যবহৃত হয়। এ ফুলের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো এতে একটি গাছেই বিভিন্ন রঙের ফুল ফুটতে পারে। শুধু তাই না, মাঝেমাঝে একই ফুলে বিভিন্ন রঙ দেখা যায়। কিছু কিছু সন্ধ্যামালতীর রয়েছে মিষ্টি গন্ধ, তবে সব ফুলে নয়। এ ফুল দিয়ে গাঁথা যায় বিনা সুতার মালা।
সন্ধ্যামালতী ফুল গাছের উচ্চতা গড়ে প্রায় তিন ফুট হয়ে থাকে। প্রতি শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে ফুল ধরে। ফুলের গঠন নলাকৃতির এবং দেখতে অনেকটা ধুতরা ফুলের মতো। আকারে ছোট, ফুলের পাপড়ি পাঁচটি ভাগে বিভক্ত, নমনীয় কোমল, মাঝে পরাগ অবস্থিত ও ফুটন্ত ফুলগুলো থাকে ঊর্ধ্বমুখী।
এ ফুলের রয়েছে বাহারি রঙের জাত। গোলাপী, লাল, হলুদ, কমলা, সাদা ও মিশ্র রঙের ফুল ফুটতে দেখা যায়। সাধারণত গ্রীষ্ম থেকে হেমন্ত পর্যন্ত সন্ধ্যামালতী গাছে ফুল ফোটে। তবে বর্ষাকালে গাছ ফুলে ফুলে ভরে যায়।
উঁচু শুকনো মাটি ও রৌদ্রোজ্জ্বল পরিবেশ এ ফুলগাছ জন্মানোর জন্য উপযুক্ত। সরাসরি মাটি ও টবে রোপণ উপযোগী এ ফুলগাছ। ফুল শেষে গাছে বীজ হয়। পরিপক্ব বীজের রং কালো, আকারে গোলাকার। গাছের শিকড় থেকে ডালিয়ার মতো স্ফীত কন্দ জন্মায়। কন্দ ও বীজের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার ঘটে।
গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বিজয় একাত্তর প্রাঙ্গণের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য কর্তৃপক্ষ এখানে সন্ধ্যামালতী ফুলের গাছ রোপণ করেছেন। বর্ষার শুরুতেই গাছগুলো ফুলে ফুলে ভরে গেছে। পড়ন্ত বিকালে ফুল ফোটা গাছের নয়নাভিরাম দৃশ্য পথচারী ও দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।’