ধার-দেনা করে অন্যের জমি বর্গা নিয়ে পাট বুনেছিলাম (চাষ)। পাটের আবাদ ভালো হলে দাম ভালো পাব, অন্যের দেনা মিটিয়ে লাভ হবে এই আশায়। এখন বৃষ্টি না হওয়ায় পাটের আগা (মূল) শুকিয়ে যাচ্ছে, পাট গাছ বড় হচ্ছে না। আষাঢ় মাসের ১০ দিন পার হলেও দেখা মিলছে না বৃষ্টির। এখন পাট নিয়ে মহাচিন্তায় আছি। কথাগুলো বলছিলেন সদর উপজেলার সিমানন্দপুর গ্রামের পাটচাষি ইশারত শেখ।
জানা গেছে, নড়াইলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাটের আবাদ হলেও হাসি নেই কৃষকদের মুখে। পাট চাষ এখন কৃষকের গলার ফাঁস হয়ে দেখা দিয়েছে। জমিতে পানি না থাকায় মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। হতাশ হয়ে পড়ছেন পাট চাষিরা। বেশি জমিতে পাটের আবাদ হলেও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছে খোদ কৃষি বিভাগ।
সদর উপজেলার ফেদি গ্রামের তরিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর আরও বেশি জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। কিন্তু এখন জমিতে পানির খুব প্রয়োজন হলেও বৃষ্টি হচ্ছে না। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে পাটের আগা শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
লোহাগড়া উপজেলার পদ্মবিলা গ্রামের রতন বিশ্বাস বলেন, আষাঢ়-শ্রাবণ মাস বৃষ্টির সময় হলেও এ বছর বৃষ্টি হচ্ছে না। বৃষ্টির পানি না পাওয়ার কারণে পাট বড় হচ্ছে না। পাট যতটুকু বড় হয়েছে কেটে যে জাগ (পানিতে পচানো) দেব সে পানিও খাল-বিলে নেই।
কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া এলাকার আবির হোসেন বলেন, আষাঢ় মাষেও বৃষ্টি হচ্ছে না এমন অবস্থা আর কয়েকদিন চলতে থাকলে জমিতেই পাটগাছ শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, বিগত সময়ে পাটের নায্য মূল্য পাওয়ায় কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহী হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৪০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পাটের জমিতে পানি না পাওয়ায় পাটগাছ ঠিকমত বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এই মুহূর্তে পাটের জমিতে পানির খুবই প্রয়োজন। পানি না পেলে পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এই কৃষিবিদ।