রিফাতই ছিল পরিবারের একমাত্র ভরসা

বরগুনা, দেশের খবর

খাইরুল ইসলাম আকাশ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরগুনা | 2023-09-01 09:30:47

দুর্বৃত্তদের দ্বারা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার শিকার শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ। এই রিফাত ছিল পরিবারের বড় সন্তান, সঙ্গত কারণে তিনিই ছিলেন পরিবারের একমাত্র ভরসা।

সাংসারিক দায়িত্ব তার মাথায় ছিল সব। তার বাবার নাম দুলাল শরীফ, মা মোসা. ডেইজি বেগম। তার দুই ভাই ও এক বোন। বোনের নাম মৌ আক্তার। মৌ পড়ে বরগুনা সরকারি কলেজে, অনার্স প্রথর্ম বর্ষে। মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিন বছর হলো শয্যাশায়ী। বাবাও বছর খানেক আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হন, তবে মায়ের মত অতটা অসুস্থ নন।

বরগুনা সদরের পুলিশ লাইন এলাকার মো. মোজাম্মেল হোসেনের মেয়ে বরগুনা সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের মেয়ে আয়শা আক্তার মিন্নির সাথে দুই মাস আগে একই কলেজের সম্মান ফাইনাল বর্ষের ছাত্র ও সদর উপজেলার ৬ নং বুড়িরচর এলাকার দুলাল শরীফের ছেলে শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফের বিয়ে হয়। বিয়ের পরই মিন্নিকে নিজের বিয়ে করা স্ত্রী দাবি করে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, ডজন খানেক মামলার আসামি নয়ন বন্ড। এ নিয়ে রিফাতের সাথে নয়নের বিরোধ হয়।

নিহত রিফাত ও হত্যকারী নয়ন বন্ড দুইজন এক সময় ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তারা ২০১২ সালে বরগুনা জেলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। রিফাত ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন, বিয়ের পরে যুবলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ভদ্র, নম্র ও সহজ-সরল ছেলে হিসেবে এলাকায় তার সুনাম রয়েছে।

রিফাতের বাবা জলিল শরীফ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বার্তা২৪.কমকে বলেন, রিফাতকে সরিয়ে মিন্নিকে পাওয়ার জন্যই এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। এই রিফাতই ছিল আমার পরিবারের একমাত্র ভরসা। সংসারের সব ওই দেখাশোনা করতো। আমি ও আমার স্ত্রী (রিফাতের মা) দুইজনই অসুস্থ। এজন্যই রিফাতকে বিয়ে করাই। এই বিয়েতে যে আমার ছেলের জীবন যাবে, তা ভাবিনি! আজ বাবার কাঁধে একমাত্র ছেলের লাশের খাটিয়া কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার চেয়ে কষ্টের কী থাকতে পারে! আমার জীবনের বিনিময় আমার ছেলেটাকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখতো যদি! আজ আমি বাকরুদ্ধ।

রিফাতের স্বজনরা বলেন, সংসারের সব দায়িত্ব ছিল রিফাতের উপর। এখন এই পরিবারটা একদম নিঃস্ব হয়ে গেল। এখন এই পরিবার দেখাশোনা করার মতো কেউ আর রইল না।

আরও পড়ুন: রিফাতের জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল

এ সম্পর্কিত আরও খবর