প্রথমে মোবাইলে প্রেম, তারপর দুজনেই অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি, অতঃপর পারিবারিক সমঝোতায় বিয়ের আয়োজন। সব ঠিকঠাক। তারপরও এসি ল্যান্ডের (ম্যাজিস্ট্রেট) বিয়ে বাড়িতে হানা। ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়েই আসন থেকে পালিয়ে গেলেন বর দিনমজুর সজিব হোসেন (১৯)।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের ধুলাউড়ি কুঠিপাড়া গ্রামের আজিম উদ্দিনের বাড়িতে রাতে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী আরিফা খাতুনের (১৩) বাল্যবিয়ে বন্ধ করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইকতেখারুল ইসলাম।
এ সময় ছেলের বাবাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি মেয়ের বাবাকে সতর্ক করে এই মর্মে মুচলেকা নেয়া হয় যে মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক না হলে বিয়ে দেয়া যাবে না।
জানা যায়, স্কুল ছাত্রী আরিফা খাতুনের সঙ্গে মোবাইলের মাধ্যমে সম্প্রতি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল ইউনিয়নের চামটা গ্রামের এমদাদুল হকের ছেলে দিনমজুর সজিব হোসেনের (১৯) মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর আগে তারা দু’জনেই অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয় এবং এক সপ্তাহ পর বাড়ি ফিরে আসে।
বিষয়টি জানাজানি হলে উভয় পরিবারের লোকজন বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) আরিফা ও সজিবের বিয়ের দিন ধার্য করেন। সেই মোতাবেক বিয়ের দিন কনে আরিফাদের বাড়ি নানা রকম ফুল দিয়ে সাজানো হয়। বর ও আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে চলে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন।
চাটমোহর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইকতেখারুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন ওই এলাকাতে বাল্য বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। এ খবরে পুলিশ নিয়ে তিনি ওই বাড়িতে হানা দেন। এ সময় পালিয়ে যায় বর সজিব হোসেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্য বিয়ে দেওয়ার অপরাধে বরের বাবা এমদাদুল হককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়েকে বিয়ে দেবেন না মর্মে কনের মা-বাবার কাছ থেকে মুচলেকা নেন। রাতেই বরপক্ষের কাছ থেকে জরিমানার টাকা আদায় করে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
কনের আত্মীয়স্বজনেরা জানান, যেহেতু ছেলে মেয়ে উভয়ই নিজেদের পছন্দে একবার চলেও গিয়েছিল। সেজন্যই তাদের সামাজিকতা রক্ষায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করা হচ্ছিল। কিন্তু এবারে বাল্য বিয়ের অভিযোগে ফেঁসে গেলাম।