বাল্য বিয়ে প্রতিরোধী অ্যাপস উদ্বোধন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেই অ্যাপস ব্যবহারের জন্য শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব বিতরণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ অ্যাপসটি উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব বিতরণ করেন।
এ সময় কবির মাহমুদ বলেন, ‘সন্তানদের শুধু জিপিএ-৫ পাওয়ানোর প্রতিযোগিতা হবে না, তাদের মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে মায়েদের। সন্ধ্যার পর স্টার জলসা, জ্বি বাংলা না দেখে সন্তানের পাশে বসে লেখাপড়া দেখতে হবে। সন্তান কোথায় যায়, কার সাথে মেশে খেয়াল রাখতে হবে। সন্তানের হাতে মোবাইল তুলে না দিয়ে, বই ও খেলাধুলার সামগ্রী তুলে দিয়ে তাদের চারিত্রিক গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে পরিবারকেই।’
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘বাল্য বিয়ে প্রতিরোধী অ্যাপস’ ব্যবহারের জন্য ১০টি ট্যাব, ২৬টি ডিজিটাল হাজিরার মেশিন ও ৭০৮ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ হিসেবে স্কুলব্যাগ বিতরণ করা হয়।
মুলগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাফিউল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ মাস্টার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার অসীম কুমার।
স্থানীয় সরকার বিভাগের এলজিএসপি-৩ এর আর্থিক সহায়তায় এই ‘বাল্য বিয়ে প্রতিরোধী অ্যাপস’র পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
সরকার অসীম কুমার। তিনি জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের কমনরুমে ট্যাব রাখা থাকবে। বাল্য বিয়ের বিষয়ে তারা অ্যাপসে ঢুকে নিজের নাম-ঠিকানা, শ্রেণী-রোল নম্বর দিয়ে তার সমস্যার কথা লিখলে মেসেজ চলে যাবে উপজেলা প্রশাসনের কাছে। তখন প্রশাসন থেকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শুধু বাল্য বিয়েই নয়, যেকোনো যৌন হয়রানি, নির্যাতন বিষয়েও একইভাবে অ্যাপসে ছাত্রীরা জানালে উপজেলা প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
গুগল প্লে স্টোরেও পাওয়া যাবে ‘বাল্য বিয়ে প্রতিরোধী অ্যাপস’। অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধি, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।
গত বছর দেশে প্রথম চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নে ঘরে বসে ট্যাক্স পরিশোধ করা ও ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সেবা পাওয়ার অ্যাপস চালু করা হয়। যার পরিকল্পনাকারী ছিলেন ইউএনও সরকার অসীম কুমার। আগে যেখানে বছরে ইউনিয়ন পরিষদে ৫০-৬০ হাজার টাকা ট্যাক্স আদায় হতো। অ্যাপসের মাধ্যমে চলতি অর্থ বছরে সেখানে ৭ লাখ টাকা ট্যাক্স আদায় হয়েছে।